বরফের উপর এক বিস্ময়: ইলিয়া মালিনিন, সাফল্যের শীর্ষে থেকেও কেন অপূর্ণ?

বরফের ‘সুপারম্যান’: ইলিয়া মালিনিনের বিশ্বজয়, চোখে অলিম্পিক।

ফিগারে স্কেটিংয়ের দুনিয়ায় যেন এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ প্রতিভাবান ইলিয়া মালিনিন। সম্প্রতি বোস্টনের টিডি গার্ডেনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ফিগার স্কেটিং চ্যাম্পিয়নশিপে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে আবারও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মুকুট জয় করেছেন তিনি।

মালিনিনের এই জয় শুধু খেতাব ধরে রাখাই নয়, বরং অসম্ভবকে সম্ভব করার এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত।

২০ বছর বয়সী এই আমেরিকান স্কেটার তার মনোমুগ্ধকর পারফর্ম্যান্সে সকলকে তাক লাগিয়ে দেন। কঠিন সব জাম্পের মিশেলে গড়া তার প্রোগ্রামটি ছিল অত্যন্ত আকর্ষণীয়।

বিশেষ করে, তিনি তার পারফর্ম্যান্সে সাতটি কোয়াড্রপল জাম্প যুক্ত করার চেষ্টা করেন, যা ফিগার স্কেটিংয়ে খুবই কঠিন এবং বিরল একটি বিষয়। যদিও সবকটি জাম্প তিনি নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করতে পারেননি, তবুও তার স্কোর ছিল অন্য সবার থেকে অনেক বেশি।

মালিনিনের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে কঠোর অনুশীলন এবং একাগ্রতা। তিনি সবসময় নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে চান, নতুন কিছু করতে চান।

তার ভাষায়, “আমি সবসময়ই আমার সেরাটা দিতে চেষ্টা করি, কারণ আমি জানি, আমার আরও অনেক কিছু দেওয়ার আছে।” তার এই জেদ এবং কঠোর পরিশ্রমই তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে।

এই প্রতিযোগিতায় মালিনিন মোট ৩১৮.৫৬ পয়েন্ট অর্জন করেন, যা দ্বিতীয় স্থান অধিকারীর চেয়ে ৩১ পয়েন্ট বেশি। তার এই বিশাল ব্যবধান প্রমাণ করে, ফিগার স্কেটিংয়ে তিনি কতটা প্রভাবশালী।

মালিনিনের এমন সাফল্যের কারণে অনেকেই তাকে ‘বরফের সিমোন বাইলস’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

তবে মালিনিনের আসল লক্ষ্য এখন আসন্ন শীতকালীন অলিম্পিক। মিলান-কোর্টিনা ডি’আম্পেজ্জোতে অনুষ্ঠিতব্য এই আসরে ভালো ফল করার জন্য তিনি এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছেন।

তিনি মনে করেন, অলিম্পিক একটি বিশেষ মঞ্চ, যেখানে দলগতভাবে খেলার সুযোগ থাকে।

গ্রীষ্মের ছুটিতে কিছু প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়ার পর তিনি নতুন করে অলিম্পিকের জন্য প্রস্তুতি শুরু করবেন। তার এই প্রস্তুতিতে নতুন প্রোগ্রাম এবং কৌশল যুক্ত করা হবে, যাতে তিনি তার সেরাটা দিতে পারেন।

মালিনিনের কথায়, “আসন্ন অলিম্পিকের জন্য আমি মুখিয়ে আছি। আমি আমার সেরাটা দিতে চাই এবং দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনতে চাই।”

ফিগার স্কেটিংয়ে ইলিয়া মালিনিনের এই জয় তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি অনুপ্রেরণা। তার কঠোর পরিশ্রম, একাগ্রতা এবং নিজের প্রতি বিশ্বাস তাকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।

নিঃসন্দেহে, ভবিষ্যতের জন্য তিনি আরও অনেক চমক নিয়ে আসবেন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *