যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন, যা বিশ্ব বাণিজ্যকে নতুন করে অস্থির করে তুলেছে। একই সঙ্গে, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিরল মৃত্তিকা ধাতু (rare earth elements) নিয়ে একটি সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। এই দুটি ঘটনাই আন্তর্জাতিক বাজারে সৃষ্টি করেছে নতুন উদ্বেগ।
ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, তিনি বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের কথা ভাবছেন। যদিও তিনি নির্দিষ্ট করে কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি, তবে ধারণা করা হচ্ছে এর মূল লক্ষ্য চীনসহ অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলো। এই ধরনের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের ফলে আমদানি ও রপ্তানি খরচ বেড়ে যায়, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এক ধরনের অচলাবস্থা তৈরি করতে পারে।
এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও, কারণ এই দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বিদ্যমান।
অন্যদিকে, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিরল মৃত্তিকা ধাতু নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তা প্রযুক্তিগত দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিরল মৃত্তিকা ধাতুগুলি আধুনিক প্রযুক্তির অপরিহার্য উপাদান। যেমন – মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, বৈদ্যুতিক গাড়ি, এবং নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনে এর ব্যবহার অপরিহার্য।
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এই ধরনের চুক্তি হলে, তা একদিকে যেমন দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে, তেমনি বিশ্ববাজারে এই গুরুত্বপূর্ণ ধাতুগুলির সরবরাহ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে পারে।
এই চুক্তির ফলে বিরল মৃত্তিকা ধাতুগুলির সহজলভ্যতা বাড়লে, তা উন্নত বিশ্বের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রযুক্তিগত উন্নয়নেও সহায়তা করতে পারে। তবে, এর কিছু ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবও থাকতে পারে।
কারণ, বিরল মৃত্তিকা ধাতুগুলির বাজারের নিয়ন্ত্রণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকি এবং রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার বিরল মৃত্তিকা ধাতু বিষয়ক আলোচনা – উভয়ই বিশ্ব অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে, বিশ্ব বাণিজ্য এবং প্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যৎ গতিপথ নতুন করে নির্ধারিত হতে পারে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিও এই পরিবর্তনের প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। তাই, দেশের নীতিনির্ধারক এবং বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট সকলেরই এই বিষয়গুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা