কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভারতীয় ছাত্রী, যিনি ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে বিতর্কে জড়িয়েছেন, তাকে নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। ওই ছাত্রীর ভিসা বাতিল এবং পরে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের কর্মকর্তাদের তার অ্যাপার্টমেন্টে তল্লাশি চালানো নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
রঞ্জনী শ্রীনিবাসন নামের ওই ছাত্রী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে নেই। তিনি নগর পরিকল্পনা বিষয়ে ডক্টরেট করছিলেন। জানা গেছে, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই প্রথমে তার অ্যাপার্টমেন্টে যান নিরাপত্তা বিভাগের লোকজন। পরে অবশ্য তারা আদালতের পরোয়ানা নিয়ে ফিরে আসেন।
রঞ্জনীর আইনজীবী নাথান ইয়েফ জানিয়েছেন, নিউইয়র্ক সিটির স্থানীয় আইন অনুযায়ী, কর্তৃপক্ষের এই ছাত্রীর বিষয়ে কোনো তথ্য জানার কথা নয়। কারণ বিক্ষোভের সময় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো পরে খারিজ হয়ে গিয়েছিল।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত বছরের এপ্রিল মাসে। ওই সময় গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে হওয়া একটি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন রঞ্জনী। বিক্ষোভের সময় ট্রাফিক আইন ভাঙা এবং জমায়েত থেকে সরতে অস্বীকার করার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছিল। যদিও পরে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো আদালত খারিজ করে দেন।
রঞ্জনী জানান, ভিসা নবায়নের সময় তিনি পুরোনো ঘটনার কথা উল্লেখ করেননি। তার মতে, তিনি কোনো ভুল করেননি এবং কিছু লুকানোরও চেষ্টা করেননি। তিনি যদি কোনো ভুল করে থাকেন, তাহলে কর্তৃপক্ষকে তা জানাতে প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু তাকে সে সুযোগ দেওয়া হয়নি।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (Department of Homeland Security – DHS) জানায়, রঞ্জনী শ্রীনিবাসন হামাসকে সমর্থন করেন, এমন কিছু কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তবে রঞ্জনী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তিনি কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সমর্থক নন এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন।
রঞ্জনীর আইনজীবী নাথান ইয়েফ আরও জানান, ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্তের পেছনে কর্তৃপক্ষের অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তার মতে, রঞ্জনীর বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো কারণ নেই।
রঞ্জনীর ভিসা বাতিলের কারণ জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানায়, তিনি বিক্ষোভের সময় পাওয়া অভিযোগগুলো ভিসার আবেদনে উল্লেখ করেননি। তবে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস জানিয়েছেন, নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ কোনো নাগরিক বিষয়ক কাজে সহযোগিতা করে না।
এদিকে, রঞ্জনী শ্রীনিবাসন দ্রুত তার ডক্টরেট শেষ করতে চান এবং তার নাম-পরিষ্কার করতে চান। তিনি মনে করেন, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় তার পাশে দাঁড়াতে পারত।
তথ্য সূত্র: সিএনএন