মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্প: ত্রাণ প্রদানে পিছিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, এগিয়ে চীনসহ অন্যান্য দেশ
গত শুক্রবার মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ভূমিকম্পের ফলে এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা ১,৭০০ ছাড়িয়েছে এবং এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভূমিকম্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় চীন, রাশিয়া, ভারত, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ দ্রুত ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের ত্রাণ প্রদানে অপেক্ষাকৃত ধীরগতি দেখা গেছে।
ভূমিকম্পের পরপরই চীন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে উদ্ধারকর্মী, বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসা কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল পাঠানো হয়েছে।
এছাড়াও, ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে তাঁবু, কম্বল ও প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জামও পাঠানো হয়েছে। হংকংও জরুরি ত্রাণ সহায়তার জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে এবং উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে।
রাশিয়াও উদ্ধারকর্মী ও চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে এগিয়ে এসেছে। ভারত এরই মধ্যে ত্রাণ নিয়ে একটি বিমান পাঠিয়েছে এবং আরও কয়েকটি বিমান ও নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যুক্তরাজ্য মানবিক সহায়তার জন্য অর্থ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও জরুরি ত্রাণ হিসেবে সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র প্রাথমিকভাবে সামান্য পরিমাণ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি আশ্রয়, খাদ্য, চিকিৎসা এবং পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি হ্রাস করার কারণে আন্তর্জাতিক দুর্যোগে প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষেত্রে তাদের সক্ষমতা কমে গেছে বলে অনেকে মনে করছেন। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের একটি মূল্যায়ন দল ভূমিকম্পের প্রায় এক সপ্তাহ পর মিয়ানমারে পৌঁছাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্যোগের সময় দ্রুত সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization – WHO) দুবাই থেকে জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করছে এবং আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জীবন বাঁচাতে ও রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রায় ৮ মিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে।
মিয়ানমারের এই কঠিন পরিস্থিতিতে দ্রুত ত্রাণ সরবরাহ করা জরুরি। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য খাদ্য, আশ্রয়, চিকিৎসা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবি।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই কঠিন সময়ে মিয়ানমারের পাশে দাঁড়ানো।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান