মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা চলছে, যেখানে ক্যাথলিক চ্যারিটিজ ব্যুরো উইসকনসিন রাজ্যের একটি আইনের বিরুদ্ধে লড়ছে। এই মামলার কেন্দ্রে রয়েছে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং বেকারত্ব কর বিষয়ক একটি বিতর্ক।
খবর অনুযায়ী, শীর্ষ আদালত সম্ভবত ক্যাথলিক চ্যারিটিজের পক্ষেই রায় দিতে পারে।
মামলার মূল বিষয় হলো, একটি সামাজিক পরিষেবা সংস্থা হিসেবে ক্যাথলিক চ্যারিটিজ কি বেকারত্ব কর থেকে অব্যাহতি পাওয়ার যোগ্য?
উইসকনসিন রাজ্যের নিয়ম অনুযায়ী, ধর্মীয় উদ্দেশ্যে পরিচালিত সংস্থাগুলি এই কর থেকে মুক্তি পেতে পারে। কিন্তু রাজ্যের যুক্তি হলো, ক্যাথলিক চ্যারিটিজের দৈনন্দিন কাজকর্ম সরাসরি ধর্মীয় শিক্ষার সঙ্গে জড়িত নয়, তাই তারা এই সুবিধা পাওয়ার যোগ্য নয়।
অন্যদিকে, ক্যাথলিক চ্যারিটিজের বক্তব্য হলো, তাদের কাজের মূল ভিত্তি হলো ধর্মীয় বিশ্বাস। তারা মনে করে, এই ধরনের সংস্থাকে করের আওতায় আনা হলে তা তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্ব করবে।
এই যুক্তির সমর্থনে তারা জানায়, অন্যান্য অনেক ধর্মীয় সংগঠনকে যদি এই কর থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়, তাহলে তাদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হওয়া উচিত।
শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বক্তব্যেও এই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, তারা সম্ভবত ক্যাথলিক চ্যারিটিজের প্রতি সহানুভূতিশীল। বিচারপতিদের প্রশ্ন ছিল, রাজ্য সরকার কি কোনো নির্দিষ্ট ধর্মকে অন্য ধর্মগুলোর চেয়ে বেশি সুবিধা দিচ্ছে?
কোনো কোনো বিচারপতি মনে করেন, এই ধরনের কর আরোপ করা হলে তা ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সীমিত করতে পারে।
মামলাটি শুধু ক্যাথলিক চ্যারিটিজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, এর প্রভাব অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উপরও পড়তে পারে। যদি আদালত ক্যাথলিক চ্যারিটিজের পক্ষে রায় দেয়, তবে উইসকনসিনের ধর্মীয় হাসপাতালগুলোর মতো বড় সংস্থাগুলোও একই সুবিধা চাইতে পারে।
এর ফলে রাজ্যের বেকারত্ব বীমা ব্যবস্থার উপর বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।
এই মামলার শুনানি এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন উইসকনসিন রাজ্যে সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচন নিয়েও আলোচনা চলছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই মামলার রায় সেখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। আদালত আগামী জুন মাসের শেষ নাগাদ এই মামলার রায় ঘোষণা করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম সংশোধনী অনুযায়ী, সরকার কোনো ধর্মকে অন্য ধর্মের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে পারে না।
এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত তাই শুধু একটি কর বিষয়ক বিষয় নয়, বরং ধর্মীয় স্বাধীনতার বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে এর তাৎপর্য রয়েছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।