বৈবাহিক জীবনে অতৃপ্তি: আধুনিক সম্পর্ক এবং প্রযুক্তির প্রভাব আজকের ডিজিটাল যুগে, সম্পর্কের ধারণাগুলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে।
দীর্ঘদিনের দাম্পত্য জীবনেও এর প্রভাব পড়ছে, যা ভালোবাসার গভীরতা এবং ঘনিষ্ঠতাকে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে। অনেক সময়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহারের কারণে তৈরি হচ্ছে জটিলতা।
সম্প্রতি, এমন একটি ঘটনার কথা জানা গেছে, যেখানে একজন নারী, যিনি ১০ বছর ধরে বিবাহিত, তাঁর জীবনে এক অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন আসে।
তিনি জানান, আগে তিনি কখনোই অন্য কোনো পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হননি। স্বামী এবং তাঁর মধ্যে স্বাভাবিক একটি যৌন সম্পর্ক ছিল।
কিন্তু পুরোনো এক বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ হওয়ার পর, তাঁদের মধ্যে বার্তালাপ শুরু হয়, যা ধীরে ধীরে আবেদনময় বার্তায় রূপ নেয়। তিনি এমন কিছু ছবি এবং বার্তা আদান-প্রদান করেন, যা তাঁর স্বভাবের সঙ্গে একদমই মেলে না।
তাঁরা একান্তে মিলিত হওয়ার পরিকল্পনাও করেছিলেন, যেখানে স্বামী, সন্তান এবং সংসারের কোনো দায়বদ্ধতা থাকত না। কিন্তু যখন তিনি বন্ধুটির কাছে তাঁদের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ জানতে চান, তখন তিনি জানান যে, তাঁদের মধ্যে আর কোনো যোগাযোগ রাখা সম্ভব নয়। এতে তিনি খুবই ভেঙে পড়েন।
এই ঘটনার পর, তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে মিলিত হতে অনীহা প্রকাশ করতে শুরু করেন। তাঁর মনে হয়, স্বামীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কটি আগের মতো আকর্ষণীয় নেই।
তাঁর প্রশ্ন, কীভাবে তিনি তাঁর বিবাহিত জীবনকে আগের মতো স্বাভাবিক করতে পারেন?
এই বিষয়ে মনোচিকিৎসক ড. পামেলা স্টিফেনসন কনেলি (Dr. Pamela Stephenson Connolly), যিনি যৌন সমস্যা নিয়ে কাজ করেন, তাঁর পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি মনে করেন, ভার্চুয়াল জগতে সম্পর্কের ধারণা অনেক সময় বাস্তবতার থেকে ভিন্ন হতে পারে। এই ধরনের অভিজ্ঞতায় অনেক সময় মানসিক আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ড. কনেলি আরও বলেন, আমাদের নিজেদের আনন্দ খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে তিনি কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রথমে নিজের স্বামীর সঙ্গে কাটানো আনন্দের মুহূর্তগুলো কল্পনা করা যেতে পারে। এরপর, শান্ত ও খোলামেলা পরিবেশে তাঁর সঙ্গে কথা বলে দেখা যেতে পারে, তিনি কী ধরনের বিষয় উপভোগ করেন।
ড. কনেলি আরও যোগ করেন, দাম্পত্য জীবনে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং খোলামেলা আলোচনা খুবই জরুরি। সঙ্গীর ভালো লাগা এবং ভালোবাসাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
প্রয়োজনে, কোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে, যা সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে সাহায্য করবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, ভালোবাসার সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে দু’জনেরই চেষ্টা প্রয়োজন। পারস্পরিক সম্মান, বিশ্বাস এবং আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: The Guardian