শুক্রবার ইয়ুনের ভাগ্য নির্ধারণ: দক্ষিণ কোরিয়ার আদালতের চূড়ান্ত ঘোষণা!

দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি ইউন সুক-ইওল-কে অভিশংসন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে শুক্রবার রায় দেবে দেশটির সাংবিধানিক আদালত। গত বছর সামরিক আইন জারির ঘোষণার জেরে আইনপ্রণেতারা তাকে অভিশংসন করেছিলেন।

মঙ্গলবার আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা) এই রায় ঘোষণা করা হবে এবং সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

যদি আদালত ইউন সুক-ইওলের অভিশংসন বহাল রাখে, তবে তাকে পদ থেকে অপসারণ করা হবে। এক্ষেত্রে, ৬০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। অন্যদিকে, যদি অভিশংসন খারিজ হয়ে যায়, তাহলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে বরখাস্ত থাকা ইউন সুক-ইওলকে তাৎক্ষণিকভাবে স্বপদে বহাল করা হবে।

আদালতের শুনানিতে অন্তত আটজন বিচারকের মধ্যে ছয়জনের সমর্থন প্রয়োজন হবে ইউনকে ক্ষমতাচ্যুত করতে। এই সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ।

সাবেক সরকারি কৌঁসুলি ইউন সুক-ইওল দাবি করেন, বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির অসহযোগিতা এবং উত্তর কোরিয়ার প্রতি তাদের নমনীয় মনোভাবের কারণে তিনি স্বল্প সময়ের জন্য সামরিক আইন জারি করেছিলেন।

তবে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বা জাতীয় পরিষদ সর্বসম্মতভাবে এই ডিক্রি বাতিল করার পর, তিনি ছয় ঘণ্টার মধ্যেই তা প্রত্যাহার করে নেন।

সামরিক আইনের মেয়াদ স্বল্প সময়ের জন্য হলেও, দক্ষিণ কোরিয়ার আধুনিক গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তিতে কালিমা লেপন করেছে, যা দেশটির অতীতের স্বৈরাচারী শাসনের স্মৃতিকে আবার জাগিয়ে তোলে।

জানা গেছে, ২০২২ সালে কোনো রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছাড়াই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন ইউন সুক-ইওল। সামরিক আইন জারির কারণে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অভিযোগেও পৃথকভাবে বিচার চলছে।

যদিও দক্ষিণ কোরিয়ার গণতান্ত্রিক যুগের অনেক নেতাকে মেয়াদ শেষে বিভিন্ন অপরাধের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তবে ইউন সুক-ইওলই প্রথম রাষ্ট্রপতি যিনি এখনো পদে থাকাকালীন বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন।

শুক্রবার প্রকাশিত একটি জনমত জরিপে দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ মানুষ ইউনকে অপসারণের পক্ষে মত দিয়েছে।

এদিকে, সম্ভাব্য নির্বাচনের জন্য ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা লি জায়ে-মিয়ং-কে প্রধান প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে। বুধবার একটি আপিল আদালত নির্বাচন আইন লঙ্ঘনের দায়ে তার আগের সাজা বাতিল করে দেয়, যার কারণে তিনি পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারতেন না।

এছাড়া, সাংবিধানিক আদালত গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী হান ডুক-সুর অভিশংসনও বাতিল করে, ফলে তিনি ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *