যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ১৯৬৩ সালের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আজও যেন রহস্যে মোড়া। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নতুন কিছু সরকারি নথি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে, যা নিয়ে আবারও শুরু হয়েছে আলোচনা।
আর এই আলোচনার কেন্দ্রে এবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে আসছেন অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা অলিভার স্টোন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসের একটি বিশেষ টাস্কফোর্সের কাছে সাক্ষ্য দেবেন অলিভার স্টোন। এই টাস্কফোর্স কেনেডি হত্যা সংক্রান্ত নতুন প্রকাশিত নথিগুলো পর্যালোচনা করছে।
অলিভার স্টোন ১৯৯১ সালে ‘জেএফকে’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন, যেখানে কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পেছনে গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। ছবিটিতে তৎকালীন সরকারের যোগসাজশের বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
ফ্লোরিডার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান আনা পাওলিina লুনা, যিনি এই টাস্কফোর্সের প্রধান, জানিয়েছেন, তিনি লেখক ও গবেষকদের সঙ্গে কাজ করে “যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ ‘কোল্ড কেস’ ফাইল” সমাধানে সাহায্য করতে চান। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ‘একক বন্দুকধারী’র তত্ত্বই সঠিক।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপট বেশ বিস্তৃত। ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর টেক্সাসের ডালাসে এক মোটর শোভাযাত্রা চলাকালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ঘটনার তদন্তের জন্য গঠিত হয় ওয়ারেন কমিশন। তারা ১৯৬৪ সালে তাদের প্রতিবেদনে জানায়, প্রাক্তন মেরিন সেনা সদস্য, ২৪ বছর বয়সী লি হার্ভে অswald একাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তবে, এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে অনেকেই একমত হতে পারেননি।
কেনেডি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে এর আগেও অনেকবার বিতর্ক হয়েছে। ১৯৭৮ সালে কংগ্রেসের একটি কমিটি জানিয়েছিল, সোভিয়েত ইউনিয়ন, কিউবা, অথবা কোনো অপরাধ চক্রের যোগসাজশ ছিল না।
তবে, তারা এটাও উল্লেখ করে যে, সম্ভবত একটি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কেনেডিকে হত্যা করা হয়েছিল।
নতুন প্রকাশিত নথিগুলোতে যদিও কেনেডি হত্যার বিষয়ে ষড়যন্ত্রের কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে কিছু ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই অসন্তুষ্ট হয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে অলিভার স্টোনের সাক্ষ্য এবং কংগ্রেসের টাস্কফোর্সের কার্যক্রম নিঃসন্দেহে এই ঐতিহাসিক ঘটনার উপর নতুন আলো ফেলবে।
আলোচনায় আরও আসছেন জেফারসন মorley এবং জেমস ডিইউজেনিও, যারা কেনেডি হত্যাকাণ্ড নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের পক্ষে বই লিখেছেন।
মেরী ফেরেল ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ‘জেএফকে ফ্যাক্টস’ ব্লগের সম্পাদক মorley-কে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নতুন তথ্য উন্মোচনের ক্ষেত্রে লুনা’র আগ্রহকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস