ইংল্যান্ড মহিলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় ক্লোয়ি কেলির হাসি যেন ফিরে এসেছে। কয়েক সপ্তাহ আগেও জাতীয় দলে তার জায়গা নিয়ে প্রশ্ন ছিল, কিন্তু এখন তিনি দারুণ ফর্মে ফিরে এসেছেন।
সম্প্রতি আর্সেনালের হয়ে খেলার সুযোগ পাওয়ার পর তিনি আবারও আলোচনায় এসেছেন। এর পেছনে রয়েছে তার কঠোর পরিশ্রম আর ঘুরে দাঁড়ানোর অদম্য ইচ্ছাশক্তি।
মাঠের খেলায় ফেরার অনুভূতি বর্ণনা করতে গিয়ে কেলি বলেন, “আবারো ইংল্যান্ডের জার্সি পরে খেলতে পারাটা অসাধারণ। আমি কখনোই এটাকে হালকাভাবে নিই না।”
খেলার সুযোগ পাওয়ার জন্য তিনি যে চেষ্টা করেছেন, সে কথা উল্লেখ করে কেলি বলেন, “আমি জানতাম, আমাকে খেলার সুযোগ তৈরি করতে হবে। সেই লক্ষ্যে আমি কাজ করেছি।”
একসময় ম্যানচেস্টার সিটিতে খেলার সুযোগ কমে যাওয়ায় কেলির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা জেগেছিল। শীতকালীন বিরতির আগে তিনি মাত্র চারবার শুরুর একাদশে ছিলেন।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, তিনি দল ছাড়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। অবশেষে, দলবদলের শেষ দিনে তিনি আর্সেনালে লোনে যোগ দেন।
একসময় যেখানে তিনি ১২ বছর বয়সে যোগ দিয়েছিলেন, সেই পুরনো ক্লাবে ফিরে আসাটা তার জন্য ছিল যেন নতুন করে পথচলা শুরু করার মতো।
আর্সেনালে যোগ দেওয়ার পর কেলির খেলায় এসেছে পরিবর্তন। তিনি এখন মাঠে অনেক বেশি সময় পাচ্ছেন এবং উপভোগ করছেন।
কেলির ভাষ্যমতে, “আমি রেনি স্লেজার্সের অধীনে অনেক কিছু শিখছি। আমার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাওয়াটা অনেক সম্মানের।” সতীর্থ অ্যালেসিয়া রুসো এবং বেথ মিড-এর সঙ্গে তার সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে, যা মাঠের খেলায়ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
কেলির মতে, মাঠের বাইরের সম্পর্কগুলোও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি, তিনি এই দুই সতীর্থকে গোল করতে সহায়তা করেছেন।
তার মাঠের পারফরম্যান্সের উন্নতি দেখে অনেকেই মনে করছেন, ইংল্যান্ডের আসন্ন নারী নেশনস লিগে বেলজিয়ামের বিপক্ষে খেলায় এর প্রভাব পড়বে।
সোশ্যাল মিডিয়া এবং প্রচারমাধ্যমের আলোচনা থেকে নিজেকে দূরে রাখেন কেলি। মাঠের বাইরে তিনি পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করেন।
কেলির বলেন, “আমার মনে হয়, পরিবার আর বন্ধুদের সান্নিধ্য আমাকে ভালো খেলতে সাহায্য করে।”
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে কেলি বলেন, “আমি প্রতিদিন চেষ্টা করি নিজেকে আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে। ভবিষ্যতের কথা না ভেবে, আমি বর্তমানের দিকেই মনোযোগ দিচ্ছি। আমি এখন আমার পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে ফিরে এসেছি এবং জীবনের ছোট ছোট বিষয়গুলো উপভোগ করছি।”
২০২২ সালের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে জার্মানির বিপক্ষে জয়সূচক গোল করা কেলির জন্য একটি স্মরণীয় মুহূর্ত ছিল। সেই জয়ের পর তার উদযাপন এখনো ফুটবলপ্রেমীদের মনে গেঁথে আছে।
ক্লোয়ি কেলির এই ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প শুধু একজন খেলোয়াড়ের সাফল্যের কাহিনি নয়, বরং এটি আমাদের শিক্ষা দেয়—সংগ্রাম আর আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান