বৈরুত: ইসরায়েলি হামলায় ছিন্নভিন্ন, ভাঙছে শান্তি?

ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসকে সহায়তার অভিযোগে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন।

মঙ্গলবার ভোরে, মুসলিমদের অন্যতম প্রধান উৎসব ঈদ-উল-ফিতরের দিনে এই হামলা চালানো হয়। খবরটি নিশ্চিত করেছে আল জাজিরা।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য ছিল হিজবুল্লাহর সদস্য হাসান বদের। বদের ইরানের কুদস ফোর্সের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার পরিকল্পনায় সহায়তা করছিলেন।

তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের এই দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। তাৎক্ষণিকভাবে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে, হিজবুল্লাহর শক্ত ঘাঁটিতে, গত কয়েক দিনের মধ্যে এটি দ্বিতীয়বার হামলার ঘটনা। এর আগে, গত কয়েক দিনের মধ্যে একই স্থানে হামলা চালানো হয়েছিল।

লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন এই হামলাকে ‘ভয়ঙ্কর সতর্কবার্তা’ হিসেবে উল্লেখ করে ইসরায়েলের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলের এই ধরনের আগ্রাসন মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে লেবাননের বন্ধুদের সমর্থন আদায় করতে হবে।

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতিও ইসরায়েলের এই হামলাকে জাতিসংঘের প্রস্তাবনা ১৭০১ এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির চরম লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সমন্বয় করে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।

উল্লেখ্য, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত নভেম্বরে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই চুক্তির মাধ্যমে এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের অবসান ঘটেছিল।

এই চুক্তিতে ইসরায়েলি সেনাদের লেবাননের দক্ষিণ অঞ্চল থেকে এবং হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের ওই এলাকা থেকে সরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। একইসঙ্গে, সেখানে লেবাননের সেনা মোতায়েনেরও সিদ্ধান্ত হয়।

কিন্তু উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছে।

বৈরুত থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক জানিয়েছেন, উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে এবং সর্বশেষ এই হামলা লেবানন সরকারের জন্য ‘অত্যন্ত উদ্বেগের’ কারণ। কারণ, নভেম্বরে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর এই প্রথম ইসরায়েল বিমান হামলা চালালো।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *