ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তির চেষ্টা চলছে। এই চুক্তির মাধ্যমে কিয়েভ চাইছে ওয়াশিংটনের সমর্থন ধরে রাখতে।
এমনটাই জানা গেছে। সম্প্রতি ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আন্দ্রি সিবিগা মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, দু’দেশের মধ্যে একটি ‘পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য’ চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে।
মূলত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পক্ষে কথা বলছেন। সেক্ষেত্রে ইউক্রেনকে কোনঠাসা করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে কিয়েভ আশঙ্কা করছে।
এমন পরিস্থিতিতে এই খনিজ সম্পদ চুক্তি ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
আলোচনা সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ ব্যবহারের বিনিময়ে দেশটির জন্য সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে, কিভাবে এই চুক্তি সম্পন্ন হবে, তা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
জানা গেছে, প্রস্তাবিত চুক্তিতে এমন একটি ধারা যুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে, যেখানে ইউক্রেন তার খনিজ সম্পদ থেকে পাওয়া লাভের অর্থ প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সামরিক ঋণের সুদসহ পরিশোধ করবে। এরপরই কেবল অন্য কোনো খাতে অর্থ ব্যয় করতে পারবে।
অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে বিভিন্ন মহলে ভিন্নমত দেখা যাচ্ছে। চীন এই ইস্যুতে রাশিয়ার প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সম্প্রতি মস্কো সফরে গিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বৈঠকে বেইজিং, মস্কোর স্বার্থ রক্ষায় পাশে থাকার কথা জানিয়েছে। তবে, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়া আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ করছে। তিনি ইউক্রেনকে সমর্থন অব্যাহত রাখার জন্য পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হয়, এমন কোনো খনিজ সম্পদ চুক্তি তারা গ্রহণ করবেন না।
ইতিমধ্যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং ইউক্রেনের মধ্যে বিরল খনিজ দ্রব্য (rare earths) নিয়ে একটি চুক্তি হয়েছে। জার্মানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের খনিজ সম্পদ বিষয়ক যে কোনো চুক্তি অবশ্যই ইইউ’র আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা