আশ্চর্য! কঠিন সময়েও যেভাবে বাঁচলেন, বার্নি ডিটারের পরিবারের গোপন কথা ফাঁস

শিরোনাম: বার্লিন থেকে মেলবোর্ন: এক পরিবারের গল্প, আর এক অভিনব ক্যাবারে শিল্পী বার্নি ডিয়েটারের জন্মকথা

জার্মানির এক সময়ের অস্থির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, পরিবারের গোপন ইতিহাস, আর শিল্পীর নিজের জীবন – এই সবকিছু মিলেমিশে জন্ম হয়েছে এক ব্যতিক্রমী ক্যাবারে শিল্পী বার্নি ডিয়েটারের। বার্নি ডিয়েটারের স্রষ্টা, জেন বার্নের জীবন ও কাজের গল্প এখন বিশ্বজুড়ে আলোচিত।

বার্নি ডিয়েটারের চরিত্রটি তৈরি হওয়ার পেছনে রয়েছে জেন বার্নের নিজের জীবনের নানা অভিজ্ঞতা। শৈশবে অপ্রত্যাশিতভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জগতে প্রবেশ, জার্মানিতে বেড়ে ওঠা, এইসব কিছুই বার্নি ডিয়েটারের চরিত্রে প্রভাব ফেলেছে। বার্নের কথায়, বার্নি যেন তার ভেতরের ‘আমি’-রই প্রতিচ্ছবি, যা সমাজের চোখে হয়তো সবসময় প্রকাশ করা সম্ভব হয় না।

তবে বার্নির জীবনের গভীরতা আরও গভীরে প্রোথিত। তাঁর পরিবারের অতীতের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই চরিত্রের যোগসূত্র। সম্প্রতি তিনি জানতে পারেন, তাঁর ঠাকুরমা, যিনি একসময় জার্মানিতে এক ভ্রাম্যমাণ সার্কাসে কাজ করতেন, সেই সার্কাসের জীবনও বার্নিকে প্রভাবিত করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, যখন জার্মানি দুটি ভাগে বিভক্ত, তখন তাঁর ঠাকুরমাকে পূর্ব জার্মানি থেকে পালাতে হয়েছিল।

বার্নের ঠাকুরমা ১৯৩২ সালে ড্রেসডেনে জন্মগ্রহণ করেন এবং সার্কাসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কঠিন সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে পালিয়ে আসার ঘটনা ছিল অত্যন্ত কষ্টকর। জানা যায়, ঠাকুরমাকে লুকানো অবস্থায় সীমান্ত পার হতে হয়েছিল।

জেন বার্নের ঠাকুরমার সার্কাসের জীবন এবং বার্নি ডিয়েটারের শৈল্পিক জগৎ – এই দুইয়ের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পাওয়াটা বার্নের কাছে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এই আবিষ্কারের ফলে বার্নি আরও গভীরভাবে বুঝতে পেরেছেন তাঁর চরিত্রের জন্মরহস্য।

বার্নি ডিয়েটারের পারফরম্যান্স সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাঁর পরিবেশনা, বিশেষ করে যেখানে যৌনতা এবং লিঙ্গ পরিচয়ের ধারণাগুলি নিয়ে রক্ষণশীলতা রয়েছে, সেখানে এক ভিন্ন আবেদন তৈরি করে। হাঙ্গেরি এবং জাপানের মতো দেশে তাঁর অনুষ্ঠানগুলি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, যেখানে তিনি সমাজের প্রচলিত ধ্যান-ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেন।

অনুষ্ঠান শেষে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া বার্নিকে বিস্মিত করে। কেউ কেউ তাঁর অনুষ্ঠান দেখে নতুন করে জীবন শুরু করতে উৎসাহিত হয়েছেন। বার্নির মতে, তাঁর সৃষ্টিশীলতার মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষকে আনন্দ দেওয়া এবং তাদের ভেতরের শক্তিকে জাগিয়ে তোলা।

বার্নি ডিয়েটারের চরিত্রটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও পরিণত হচ্ছে। বার্নি এবং জেন – এই দুই সত্তার মধ্যেকার ব্যবধান ক্রমশ কমছে, যা শিল্পীর অভিজ্ঞতার গভীরতা আরও বাড়িয়ে তোলে।

বর্তমান বিশ্বে যখন রক্ষণশীলতা বাড়ছে, তখন বার্নি ডিয়েটারের মতো শিল্পীদের কাজ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের পরিবেশনা যেন সমাজের চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়, পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা কতখানি।

বার্নি ডিয়েটারের ‘ক্লাব কাবার্যাট’ অনুষ্ঠানটি বর্তমানে মেলবোর্নে চলছে (এপ্রিল ৩ – মে ১১)। এরপর তা এডিনবার্গ-এ অনুষ্ঠিত হবে (আগস্ট ১-২৩)।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *