যুক্তরাষ্ট্রে (US) কর্মসংস্থানের বাজারে দেখা যাচ্ছে মন্দাভাব, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য কিছু উদ্বেগের কারণ হতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে সেখানে নতুন চাকরির সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
এই প্রবণতা বিশ্ব অর্থনীতির গতিপ্রকৃতির উপর নির্ভরশীল আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি সতর্কবার্তা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরো (Bureau of Labor Statistics) -এর তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে চাকরির শূন্যপদের সংখ্যা ছিল ৭.৫৭ মিলিয়ন। যেখানে জানুয়ারি মাসে এই সংখ্যাটা ছিল ৭.৭৬ মিলিয়ন।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা ছিল, ফেব্রুয়ারিতে শূন্যপদের সংখ্যা ৭.৬২৫ মিলিয়নে নামতে পারে। যদিও বাস্তবে পরিস্থিতি তাদের পূর্বাভাসের চেয়েও খারাপ হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতির প্রধান কারণ হল অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি, বিশেষ করে ফেডারেল সরকারের কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তের কারণে বেসরকারি খাতেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
এর ফলস্বরূপ, বিনিয়োগকারীরা কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত হচ্ছেন এবং নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রেও তারা সতর্ক হচ্ছেন।
জানুয়ারী মাসের শুরুতে অবশ্য কর্মীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের একটি চিত্র দেখা গিয়েছিল। সেই সময় কর্মী ছাঁটাই কম ছিল এবং অনেকে চাকরি ছাড়ছিলেন, যা সাধারণত ভালো অর্থনীতির লক্ষণ।
কিন্তু অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলেছিলেন যে, ২০২৩ সালের প্রথম দিকের শ্রম বাজারের এই চিত্র ‘ঝড়ের আগের নীরবতা’ হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর অনেকগুলো দিক আমাদের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে।
উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা রেমিট্যান্সের (remittance) উপর এর প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের প্রধান বাজার হল যুক্তরাষ্ট্র।
সেখানকার অর্থনৈতিক মন্দা আমাদের রপ্তানি খাতেও খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা আমাদের দেশের জন্য সতর্ক থাকার এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়িয়ে তোলে।
সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের চাকরির বাজারের এই মন্দা বাংলাদেশের নীতিনির্ধারক এবং সাধারণ মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশ্ব অর্থনীতির পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: CNN