মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পণ্যগুলোর উপর শুল্ক আরোপ করে, তাহলে তার মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে ইইউ।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডেয়ার লিয়েন জানিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে তারা আগ্রহী, তবে প্রয়োজনে পাল্টা ব্যবস্থা নিতেও পিছপা হবে না ইইউ।
বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্কের নিশানায় রয়েছে সেমিকন্ডাক্টর, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কাঠজাত পণ্য।
এর আগে, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময়ে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এমনকি শোনা যাচ্ছে, তিনি পুনরায় নির্বাচিত হলে গাড়ির শুল্কও বাড়াতে পারেন।
ইতোমধ্যে, ইইউ এই ধরনের পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে।
জানা গেছে, প্রায় ২৬ বিলিয়ন ইউরোর মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এর মধ্যে রয়েছে, জিন্স এবং হার্লে-ডেভিডসন মোটরসাইকেলের মতো পণ্যের উপর শুল্ক পুনর্বহাল করা।
জো বাইডেনের শাসনামলে এই শুল্কগুলো স্থগিত করা হয়েছিল। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে এই পদক্ষেপগুলো কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়াও, ইইউ আরও একটি পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করছে, যার পরিমাণ প্রায় ১৮ বিলিয়ন ইউরো।
এই পদক্ষেপের আওতায় ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, পোলট্রি, গরুর মাংস, সামুদ্রিক খাবার এবং বাদামের মতো পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। তবে, এই বিষয়ে ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আলোচনা চলছে, কারণ অনেক দেশ তাদের নিজস্ব স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
উদাহরণস্বরূপ, ফ্রান্স তাদের ওয়াইন ও স্পিরিট শিল্পের উপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে চিন্তিত।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ-এর মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০২৩ সালে এই বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১.৬ ট্রিলিয়ন ইউরোর বেশি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মূলত গাড়ি, ঔষধ ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের মতো জিনিসপত্র রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রের থেকে বেশি লাভবান হয়।
বাণিজ্য ক্ষেত্রে এই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকার কারণে ইইউ-এর হাতে দর কষাকষির ভালো সুযোগ রয়েছে।
উরসুলা ভন ডেয়ার লিয়েন জানিয়েছেন, বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রযুক্তি এবং বাজারের আকার—সবকিছুই ইইউ-এর শক্তি।
প্রয়োজনে কঠিন পদক্ষেপ নিতেও তারা প্রস্তুত। তবে এই ঘটনাগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কি প্রভাব ফেলবে, সে বিষয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান