চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র মস্কো সফর: দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার অঙ্গীকার
রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বর্তমানে মস্কো সফর করছেন। মঙ্গলবার তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বৈঠকগুলোতে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা আরও বাড়ানো এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের অভিন্ন স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
ওয়াং ই’র এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য আলোচনা এখনো অনিশ্চিত। একই সঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়েও আলোচনা চলছে।
ওয়াং ই’র মতে, চীন ও রাশিয়ার মধ্যেকার সম্পর্ক হলো ‘চিরকালের বন্ধু, শত্রু কখনোই নয়’। এই নীতি তাদের মধ্যেকার কৌশলগত সহযোগিতাকে আরও উচ্চ স্তরে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ওয়াং ই জোর দিয়ে বলেন, দুই দেশ তাদের অভিন্ন লক্ষ্য ও আঞ্চলিক স্বার্থের প্রতি অবিচল থাকবে।
পুতিনও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি আগামী মে মাসে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সম্ভাব্য মস্কো সফরকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়ের স্মরণে এই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ওয়াং ই বলেছেন, চীন এই যুদ্ধ বন্ধে একটি গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত।
তবে, তিনি রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষার পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখবেন। চীন এই দ্বন্দ্বে নিরপেক্ষ থাকার কথা বললেও, তারা রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মিত্র হিসেবে পরিচিত।
পশ্চিমা দেশগুলো মনে করে, রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা না দিলেও, চীন মস্কোর যুদ্ধকে সমর্থন করে আসছে।
ওয়াং ই আরও উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক আলোচনাগুলোতে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে কিছু ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে এবং এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা উচিত।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও যুদ্ধের শুরু থেকেই শান্তি আলোচনায় চীনের বৃহত্তর অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন।
এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ওয়াং ই মনে করেন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো বৃহৎ শক্তিগুলোর স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা উচিত।
এই প্রেক্ষাপটে, উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা অত্যন্ত উৎসাহজনক।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা