যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনা: মুখ খুলল রাশিয়া!

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া। রুশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রস্তাবটি তাদের মূল দাবিগুলো বিবেচনা করছে না।

সম্প্রতি এই ইস্যুতে দেশ দুটির মধ্যে আলোচনা কার্যত থমকে গেছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা সের্গেই রিয়াবকভ এক সাক্ষাৎকারে জানান, যুক্তরাষ্ট্র শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যে প্রস্তাব দিয়েছে, রাশিয়া তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রস্তাবটি গ্রহণ করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন প্রস্তাবনায় যুদ্ধবিরতির একটা কাঠামো তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা অনুযায়ী সাজানো হয়েছে।

কিন্তু এর মধ্যে রাশিয়ার প্রধান দাবিগুলো, অর্থাৎ এই সংঘাতের মূল কারণগুলো সমাধানের কোনো উপায় নেই।

পুতিন বেশ কয়েকবার ইউক্রেন যুদ্ধের ‘মূল কারণ’ উল্লেখ করে শান্তি আলোচনার শর্ত হিসেবে কিয়েভকে কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন।

  • এর মধ্যে রয়েছে ক্রিমিয়া এবং ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্তির স্বীকৃতি, ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া, ন্যাটোতে যোগ না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি এবং দেশটির সামরিকীকরণ বন্ধ করা।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শান্তি আলোচনা সফল করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও, তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। বরং রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার ব্যর্থতা বাড়ছে।

ট্রাম্প সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, এক মাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি না হলে মস্কোর ওপর শুল্ক আরোপ করা হবে।

যদিও পরে তিনি কিছুটা সুর নরম করে রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে চেষ্টা করছেন।

সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র-মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সেখানে ৩০ দিনের জন্য জ্বালানি বিষয়ক যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব আসলেও, বাস্তবে উভয়পক্ষই একে অপরের জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা অব্যাহত রেখেছে।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশগ্রহণকারী গ্রিগরি কারাসিন স্বীকার করেছেন যে, আলোচনা তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি এবং সম্ভবত আগামী বছর পর্যন্ত এটি চলতে পারে।

ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব সম্প্রতি ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাত করে প্রস্তাব দিয়েছেন, আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে পুতিনকে পূর্ণ যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি করাতে হবে।

তবে ক্রেমলিনের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো মনে করে, রাশিয়া তাদের কিছু দাবি আদায় করতে না পারলে, পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে না।

তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মিত্র দেশগুলোর কাছ থেকে ইউক্রেনে অস্ত্র ও গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ বন্ধ করা।

বর্তমানে রাশিয়া মনে করছে, তারা ধীরে ধীরে এই যুদ্ধে জয়ী হচ্ছে।

তাই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষেই তারা। কারণ, তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ধীরে ধীরে এই যুদ্ধ থেকে পিছু হটছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *