জার্মানি ও ইতালিতে মাফিয়া চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান, খাদ্য পণ্যের ব্যবসায় প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩০ জনের বেশি।
ইউরোপের দুইটি দেশ জার্মানি ও ইতালির নিরাপত্তা বাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে মাফিয়া চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ত্রিশ জনের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। এই চক্রটি মূলত খাদ্য পণ্যের ব্যবসায় প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ছিল।
ইতালির কুখ্যাত ‘এনদারাংগেতা’ মাফিয়া গোষ্ঠীর সদস্যরা এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে জানা গেছে।
অভিযানটি ছিল পাঁচ বছর ধরে চলা এক দীর্ঘ তদন্তের ফল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিচার বিভাগীয় সংস্থা ইউরোজাস্ট এবং আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সহযোগিতায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
মঙ্গলবার জার্মান পুলিশ জানায়, দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইতালিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও ২০ জনকে।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা দামি খাদ্যপণ্য, যেমন – পনির ও জলপাইয়ের তেল এবং পিৎজা তৈরির সরঞ্জাম বিক্রির নামে প্রতারণা করেছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই চক্রটি জার্মানির খাদ্য সরবরাহকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভুয়া প্রতিনিধি সেজে ইতালীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ খাদ্য ও সরঞ্জাম সরবরাহ নিতো।
এরপর তারা সেই সব পণ্যের দাম পরিশোধ না করে ইতালীয় রেস্টুরেন্টগুলোতে চাপ সৃষ্টি করতো, যেন তারা ওই পণ্যগুলো কিনে নেয়। এতে করে সরবরাহকারীরা কয়েক লক্ষ ইউরোর বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে।
জার্মান প্রসিকিউটর জোয়াখিম ডিট্রিখ জানান, এই প্রতারণার মূল কেন্দ্র ছিল জার্মানির স্টুটগার্ট শহর ও তার আশেপাশের এলাকা। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগ, মাদক পাচার ও কর ফাঁকির মতো গুরুতর অভিযোগও আনা হয়েছে।
ইতালীয় প্রসিকিউটরদের মতে, এই প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যবসায়ীরা মূলত ইতালির কালাব্রিয়ার বাসিন্দা। কালাব্রিয়া অঞ্চলটি ‘এনদারাংগেতা’ মাফিয়া চক্রের প্রধান ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা গোপন তথ্য পাচার করে এই প্রতারকদের সহায়তা করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের অপরাধ শুধু ইউরোপেই সীমাবদ্ধ নয়। উন্নত বিশ্বের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও অর্থনৈতিক প্রতারণার প্রবণতা বাড়ছে। অনেক সময়, ব্যবসায়ীরা স্বল্প সময়ে বেশি লাভের আশায় এই ধরনের চক্রের খপ্পরে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা