গাজায় ভূমি দখলের ঘোষণা ইসরায়েলের, বাড়ছে সঙ্কট!

গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বুধবার জানান, গাজার বিশাল এলাকা নিজেদের ‘নিরাপত্তা জোনে’ অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে তারা।

একইসঙ্গে, গাজার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সিএনএন সূত্রে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের এই ঘোষণার পরেই গাজায় বিমান হামলা আরও বাড়ানো হয়েছে। খান ইউনিসের নাসের হাসপাতাল এবং ইউরোপীয় হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রাতের হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুসহ ১৩ জন রাফা এলাকা থেকে আশ্রয় নিয়ে একটি বাড়িতে ছিলেন।

গত কয়েক সপ্তাহে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান আরও তীব্র হয়েছে। গত দু’সপ্তাহে সেখানে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গাজায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা এলাকার বাসিন্দাদের তাদের বাড়িঘর ছেড়ে উত্তরে চলে যেতে মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

এছাড়া, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখনো জীবিত থাকা ২৪ জন জিম্মিকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত গাজার কিছু অংশে তাদের সেনা উপস্থিতি বজায় থাকবে।

গাজার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জিম্মিদের পরিবারগুলো। তারা ইসরায়েল সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, জিম্মিদের মুক্ত করতে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে, যুদ্ধের মাধ্যমে নয়।

এদিকে, যুদ্ধবিরতি পুনরুদ্ধারের জন্য মিশর ও কাতার নতুন করে চেষ্টা চালাচ্ছে। হামাস রোববার মিশরের একটি প্রস্তাবের সঙ্গে সম্মত হয়েছে এবং সোমবার ইসরায়েল এর বিপরীতে তাদের প্রস্তাব পেশ করেছে।

মিশরীয় প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাস পাঁচজন জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন হলেন মার্কিন-ইসরায়েলি নাগরিক এডান আলেকজান্ডার।

তবে এই প্রস্তাবের মধ্যে মৃত জিম্মিদের মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

গাজায় ইসরায়েলের এই অভিযান ঘোষণার আগে থেকেই সেখানে বড় ধরনের স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নতুন প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আইয়াল জামিরের নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহ ধরে এই পরিকল্পনা চলছিল।

ধারণা করা হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকা দখল করতে পারে এবং সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্রোহ দমনের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

তবে গাজায় দীর্ঘমেয়াদী অভিযান চালালে ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও এর বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হতে পারে।

কারণ, ইসরায়েলের অধিকাংশ মানুষ জিম্মিদের মুক্তির জন্য আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে চাইছে, যুদ্ধের পুনরাবৃত্তি চায় না।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *