চীনের সামরিক মহড়া, তাইওয়ানের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে : যুক্তরাষ্ট্র
চীন তাইওয়ানের চারপাশে সামরিক মহড়া চালানোয় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বলছে, বেইজিংয়ের এই পদক্ষেপ পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতির জন্য হুমকিস্বরূপ। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই মহড়ায় তাইওয়ানের জলসীমার কাছে যুদ্ধজাহাজ ও সামরিক বিমান মোতায়েন করা হয়েছে। চীন এটিকে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে একটি ‘অবরোধ এবং আক্রমণের মহড়া’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তাইওয়ান এবং তাদের মিত্রদের পাশে আছে। চীনকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেছে, তাইওয়ানের প্রতি তাদের আগ্রাসী সামরিক কার্যকলাপ এবং হুঙ্কার উত্তেজনা আরও বাড়াচ্ছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। তাইওয়ান প্রণালীতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো পক্ষের একতরফা পদক্ষেপকে তারা সমর্থন করে না।
চীনের সরকারি সূত্রগুলো বলছে, এই মহড়া তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপের জবাব। লাই চিং-তে গত মাসে চীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন। চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি তাইওয়ানকে তাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করে এবং তাইওয়ানের সঙ্গে একত্রীকরণের পক্ষে। যদিও তাইওয়ান নিজেদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখে।
সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে, চীনের সেনাবাহিনী তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এবং জ্বালানি অবকাঠামোতে আঘাত হানার অনুশীলন করেছে। এই মহড়ার জন্য ‘স্ট্রেইট থান্ডার-২০২৫এ’ নামে একটি কোড নাম ব্যবহার করা হয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলোতে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে আক্রমণের চিত্র তুলে ধরে বিভিন্ন ভিডিও এবং কার্টুন প্রচার করা হচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তার আগের নেতাদের চেয়ে অনেক বেশি কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তার দল এবং বিরোধী দল উভয়ই চীনের শাসন প্রত্যাখ্যান করে। যদিও তারা এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে যে কীভাবে শান্তি বজায় রাখা যায়। তাইওয়ানের জনগণও চীনের শাসনের বিরোধিতা করে। অন্যদিকে, চীন তাইওয়ানের ওপর তাদের ঐতিহাসিক অধিকার দাবি করে এবং তাদের দাবি অনুযায়ী, চীনের ১৪০ কোটির বেশি মানুষ তাইওয়ানের সঙ্গে একত্রীকরণের পক্ষে রয়েছে।
চীনের এই সামরিক মহড়া এবং তাইওয়ানের প্রতি তাদের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অঞ্চলে উত্তেজনা ক্রমাগত বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে আরও জটিল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান