জেন ও: এক নারীর হারিয়ে যাওয়া সময়ের গল্প!

নিউ ইয়র্কের এক মনোবিদ, ডঃ হেনরি বার্ডের চেম্বারে আসা এক মহিলার গল্প নিয়ে গড়ে উঠেছে কারেন থম্পসন ওয়াকারের নতুন উপন্যাস ‘দ্য স্ট্রেঞ্জ কেস অফ জেন ও’। জেন ও, পেশায় একজন লাইব্রেরিয়ান, আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ একজন মানুষ।

কিন্তু তার জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা, যা তাকে এক গভীর রহস্যের দিকে ঠেলে দেয়। স্মৃতিভ্রংশতা, অতীতের কিছু না জানা ঘটনা এবং অপ্রত্যাশিত কিছু দৃশ্যের সাক্ষী হওয়া – এই সব নিয়েই আবর্তিত হয়েছে উপন্যাসের কাহিনী।

উপন্যাসে, জেন হঠাৎ করেই তার কিছু সময়ের স্মৃতি হারিয়ে ফেলেন। এই ঘটনার পর তিনি ডঃ বার্ডের দ্বারস্থ হন। ডাক্তার হিসাবে হেনরি বার্ডের সমস্যাগুলি সমাধানে গভীর মনোযোগ দিতে হয়।

কারণ, জেন দাবি করেন, তিনি এমন একজনকে দেখেছেন যিনি বহু বছর আগেই মারা গেছেন। এই ঘটনাগুলো জেনের জীবনে এক গভীর প্রভাব ফেলে এবং তার অতীতের সঙ্গে বর্তমানের একটি যোগসূত্র তৈরি হয়।

উপন্যাসের মূল চরিত্র জেন ও’র চরিত্রে লেখক এক গভীর রহস্যময়তা ফুটিয়ে তুলেছেন, যা পাঠকের মনে কৌতূহল জাগায়। ডঃ বার্ডের চরিত্রটিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, যিনি জেনের এই অস্বাভাবিক ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে চেষ্টা করেন।

উপন্যাসটি শুধু একটি রহস্য-গল্প নয়, বরং এর গভীরে রয়েছে মানুষের মনস্তত্ত্ব, স্মৃতি এবং বাস্তবতার জটিলতা। লেখক স্মৃতি, পরিচয় এবং মানসিক আঘাতের মতো বিষয়গুলি নিয়ে গভীর আলোচনা করেছেন।

গল্পের পরতে পরতে রহস্য, যা পাঠককে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখে। ওয়াকারের বর্ণনাভঙ্গি পাঠককে গল্পের সঙ্গে একাত্ম করে তোলে, যা তাকে ঘটনার গভীরে প্রবেশ করতে সাহায্য করে।

লেখকের আগের উপন্যাস, ‘দ্য এজ অফ মিরাকেলস’ এবং ‘দ্য ড্রিমারস’-এর মতোই, এই উপন্যাসটিও কল্পনাবাদী ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি।

উপন্যাসটিতে লেখকের বর্ণনাভঙ্গির সূক্ষ্মতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি ঘটনার ঘনঘটা এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, যা পাঠকের মনে গভীর প্রভাব ফেলে।

গল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, রহস্যের জাল বিস্তার করে রেখেছেন লেখক, যা পাঠকদের আকৃষ্ট করে। যদিও কিছু ক্ষেত্রে চরিত্রগুলির গভীরতা এবং তাদের ভেতরের জগৎ আরও ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলা যেত, তবে সামগ্রিকভাবে এটি একটি আকর্ষণীয় উপন্যাস।

কারেন থম্পসন ওয়াকার একজন প্রতিভাবান লেখক, যিনি তার লেখার মাধ্যমে মানুষের মনকে নাড়া দিতে জানেন। ‘দ্য স্ট্রেঞ্জ কেস অফ জেন ও’ (জেন ও’র অদ্ভুত ঘটনা) বইটি পাঠকদের জন্য একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা হতে পারে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *