যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ কমছে! ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে হতাশ পর্যটকেরা?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আগমন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে ‘ট্যুরিজম ইকোনমিক্স’ নামের একটি প্রভাবশালী সংস্থা। তাদের নতুন পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা প্রায় ৯.৪ শতাংশ কমতে পারে।

যা এর আগে ফেব্রুয়ারী মাসের শেষের দিকে করা পূর্বাভাসের দ্বিগুণেরও বেশি। বছরের শুরুতে, ট্যুরিজম ইকোনমিক্স আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে ৯ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল।

কিন্তু সম্প্রতি সময়ে বিভিন্ন বিষয় পর্যটকদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট অ্যাডাম স্যাকস জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে ইউরোপীয় পর্যটকদের হয়রানির ঘটনা, বাণিজ্য শুল্ক বৃদ্ধি, কানাডা ও গ্রিনল্যান্ডের প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপ এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে তার উত্তপ্ত আলোচনা—এসব কিছুই পর্যটকদের মধ্যে ভীতি তৈরি করেছে।

পর্যটকদের এই সংখ্যা কমার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান সংস্থা, হোটেল, জাতীয় উদ্যান এবং অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ট্যুরিজম ইকোনমিক্সের ধারণা, কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণকারীর সংখ্যা প্রায় ২০ শতাংশ কমে যেতে পারে।

এর ফলে নিউ ইয়র্ক ও মিশিগানের মতো সীমান্ত রাজ্যগুলোতে এবং ক্যালিফোর্নিয়া, নেভাদা ও ফ্লোরিডার মতো জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোতে এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাণিজ্য সংস্থা ‘ইউএস ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন’ সতর্ক করে জানিয়েছে, কানাডীয় পর্যটকদের সংখ্যা হ্রাস পেলে এর ফল মারাত্মক হবে। তাদের মতে, কানাডা থেকে ভ্রমণ ১০ শতাংশ কমলে, প্রায় ২০ লক্ষ কম পর্যটকের আগমন ঘটবে।

এর ফলে ২.১ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব ক্ষতি এবং ১৪ হাজার মানুষের চাকরি হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

অন্যান্য পর্যটন সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোও উদ্বেগের ইঙ্গিত দিয়েছে। এয়ার কানাডা তাদের বার্ষিক শেয়ারহোল্ডার বৈঠকে জানিয়েছে, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বুকিং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ কমেছে।

অ্যাডাম স্যাকস আরও জানিয়েছেন, বিদেশি পর্যটকদের আগমন কমে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। অথচ, আন্তর্জাতিক পর্যটন ২০২১ সালে ৯.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

পর্যটন বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের মতে, শুল্ক আরোপের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাণিজ্য ঘাটতি কমানো, কিন্তু এর ফলে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় বাণিজ্য ভারসাম্য আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তাদের ধারণা, কোভিড-১৯ মহামারীর আগে ২০১৯ সালের পর্যটকের সংখ্যায় ফিরতে ২০২৯ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *