মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের বাজারে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। গত কয়েক মাস ধরে বার্ড ফ্লুর কারণে ডিমের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দেশটির বাজারে ডিমের দাম আকাশ ছুঁয়েছিল।
তবে এখন পাইকারি বাজারে ডিমের দাম কমতে শুরু করেছে, যা ভোক্তাদের জন্য কিছুটা হলেও সুসংবাদ।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে এক ডজন ডিমের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৩ ডলারে, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ৯ শতাংশ কম।
ফেব্রুয়ারি মাসে এক ডজন ডিমের খুচরা মূল্য ছিল ৫.৯০ ডলার, যা গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাবের কারণে ডিম উৎপাদনকারী মুরগির খামারে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল, যার ফলস্বরূপ বাজারে ডিমের সরবরাহ কমে যায় এবং দাম বাড়ে। জানা গেছে, এ বছর প্রায় ৩ কোটি ডিম পাড়া মুরগি বার্ড ফ্লুর কারণে মারা গেছে।
তবে এখন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। বার্ড ফ্লুর প্রকোপ কমে আসায় উৎপাদনেও গতি এসেছে।
আমেরিকান ফার্ম ব্যুরো ফেডারেশনের অর্থনীতিবিদ বেরন্ট নেলসন জানিয়েছেন, বার্ড ফ্লুর প্রকোপ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাওয়াই দাম কমার প্রধান কারণ।
মার্চ মাসে যেখানে মাত্র ২১ লক্ষ পাখির শরীরে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, সেখানে জানুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৩০ লক্ষ এবং ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ।
ডিমের দাম কমলেও, ভোক্তাদের কাছে এর সুফল পৌঁছাতে বেশ কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ বলছে, পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে দাম কমার প্রভাব আসতে এখনো দেরি আছে।
যদিও কিছু দোকানে এখনো ডিম কেনাকাটার ক্ষেত্রে সীমা আরোপ করা হচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ, একটি সুপার মার্কেটে এখনো গ্রাহকদেরকে সর্বোচ্চ তিন ডজন ডিম কেনার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
তবে ডিমের দাম কমলেও, তা এখনো স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।
ফেব্রুয়ারিতে ডিমের দাম জানুয়ারির তুলনায় ১০.৪ শতাংশ বেড়েছে এবং গত বছরের তুলনায় বেড়েছে প্রায় ৫৮.৮ শতাংশ।
যদিও ডিমের দাম কমার পেছনে সরকারের পদক্ষেপ এবং বার্ড ফ্লু মোকাবিলায় ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা বলা হচ্ছে, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দাম স্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা কম।
ডিমের বাজার পরিস্থিতি বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তা এবং সরবরাহ শৃঙ্খলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ।
বাংলাদেশেও পোল্ট্রি শিল্পে বিভিন্ন সময়ে রোগবালাই দেখা যায়, যা ডিম ও মাংসের উৎপাদনে প্রভাব ফেলে।
তাই, যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন