ইন্টারনেটের জনক সহ, শত শত বিশেষজ্ঞের উদ্বেগে এআই নিয়ে বড় শঙ্কা!

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI)-এর দ্রুত অগ্রগতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলছে। প্রযুক্তিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ—সবার মনেই এই প্রযুক্তি নিয়ে কৌতূহল বাড়ছে।

তবে, ‘ইন্টারনেটের জনক’ হিসেবে পরিচিত ভিন্ট সার্ফ-এর মতো প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা AI-এর অতিরিক্ত নির্ভরতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের আশঙ্কা, মানুষ যদি AI-এর ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পরে, তাহলে মানুষের মৌলিক কিছু দক্ষতা কমে যেতে পারে।

সম্প্রতি, এলন ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, AI মানবজাতির মানসিক এবং সামাজিক স্বাস্থ্যের ওপর কেমন প্রভাব ফেলতে পারে। এই গবেষণাটি করেছেন ৩০০ জনের বেশি প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, বিশ্লেষক এবং শিক্ষাবিদ।

তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন গুগলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিন্ট সার্ফ এবং মাইক্রোসফটের প্রাক্তন গবেষক জোনাথন গ্রুডিন। তাঁদের মূল উদ্বেগের বিষয় হলো, AI মানুষের আবেগ, গভীর চিন্তা, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী এক দশকে AI মানব সমাজের অনেক কিছুই পরিবর্তন করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, AI-এর কারণে মানুষের সামাজিক এবং আবেগিক বুদ্ধিমত্তা, গভীর চিন্তাভাবনার ক্ষমতা, সহানুভূতি এবং নৈতিক বিচারের মতো বিষয়গুলোতে ‘নেতিবাচক’ পরিবর্তন আসতে পারে।

এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, মানুষ যদি সহজে উপলব্ধির জন্য, সম্পর্ক তৈরি করতে, বা কোনো তথ্য জানতে AI-এর ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়, তবে এই ধরনের দক্ষতাগুলো ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে পারে।

অন্যদিকে, AI-এর কিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে। যেমন—নতুন কিছু শেখার আগ্রহ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সমস্যা সমাধানের মতো ক্ষেত্রে এটি সাহায্য করতে পারে।

বর্তমানে বাজারে উপলব্ধ আর্টিস্টিক প্রোগ্রাম এবং কোডিং সমস্যা সমাধানের সরঞ্জামগুলো এর প্রমাণ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, AI কিছু ক্ষেত্রে মানুষের কর্মসংস্থান কমাতে পারে, তবে একই সাথে নতুন ধরনের কাজের সুযোগও তৈরি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, মানুষ যদি দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজের জন্য AI-এর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পরে, তবে এর ফলস্বরূপ সমাজে মেরুকরণ, বৈষম্য বৃদ্ধি, এবং মানুষের নিজস্ব ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, AI যদি মানবিক সম্পর্ক স্থাপনে হস্তক্ষেপ করে, তবে সত্যিকারের পারস্পরিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

তবে, এখনই হতাশ হওয়ার কারণ নেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডিজিটাল সাক্ষরতা বৃদ্ধি, উপযুক্ত আইন তৈরি এবং মানুষের সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে AI-এর খারাপ প্রভাবগুলো কমানো যেতে পারে।

ভবিষ্যতের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে এবং AI-কে কীভাবে মানুষের উন্নতির জন্য ব্যবহার করা যায়, সে বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *