রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে দেশটির সামরিক বাহিনীতে আরও ১ লক্ষ ৬০ হাজার সৈন্য যোগ করার ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ১লা এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১৫ই জুলাই পর্যন্ত এই নিয়োগ কার্যক্রম চলবে।
সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, গত কয়েক বছরের মধ্যে এটি রাশিয়ান সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় নিয়োগ অভিযান। সামরিক বাহিনীর আকার বৃদ্ধি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম তাস-এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বসন্তকালে যেখানে ১ লক্ষ ৫০ হাজার সৈন্য নিয়োগ করা হয়েছিল, সেখানে এবার সংখ্যাটি আরও ১০ হাজার বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিন বছর আগের তুলনায় এই সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি।
বর্তমানে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৫ লক্ষ, যেখানে তিন বছর আগে এই সংখ্যা ছিল ১০ লক্ষ।
বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। জানা গেছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়া তাদের সামরিক অভিযান জোরদার করেছে। এমন পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়া থেকে আসা সেনাদের সহায়তা নিচ্ছে তারা।
একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ বন্ধের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
যদিও রাশিয়ার আইন অনুযায়ী, প্রশিক্ষণ ছাড়া বাধ্যতামূলকভাবে নিয়োগ পাওয়া সেনাদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো যায় না। তবে এমন খবরও পাওয়া গেছে যে, অনেক ক্ষেত্রে সেনাদের চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হচ্ছে, যার ফলে তাদের ইউক্রেনের ফ্রন্ট লাইনে পাঠানো হচ্ছে।
এছাড়া, গত বছর রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের আকস্মিক আক্রমণের শিকারও হয়েছেন অনেকে।
সম্প্রতি, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত পকরোভস্ক শহরে রাশিয়ার সেনারা আক্রমণ জোরদার করেছে। একই সঙ্গে তারা ইউক্রেনীয় শহরগুলোতে বিমান হামলা চালাচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। জানা গেছে রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয় আলোচক কিরিল দিমিত্রিভ এই সপ্তাহে ওয়াশিংটনে সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা স্টিভ উইটকফের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন।
এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হলো, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করা এবং ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উপায় খুঁজে বের করা।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর এই প্রথম কোনো শীর্ষ রুশ কর্মকর্তা ওয়াশিংটনে গেলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উষ্ণতা বেড়েছে, যা এই বৈঠকের মাধ্যমে আরও স্পষ্ট হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প অবশ্য স্বীকার করেছেন যে, রাশিয়া সম্ভবত বিষয়টি নিয়ে ধীরে এগোচ্ছে।
এদিকে, ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য ট্রাম্পের আহ্বানে সাড়া দেননি পুতিন। বরং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বেশ কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছেন।
কৃষ্ণ সাগরে যুদ্ধবিরতির বিষয়েও তিনি একই মনোভাব দেখিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন