যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্ক আরোপের মোকাবিলায় প্রস্তুত যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘মুক্তি দিবস’ ঘোষণার প্রাক্কালে সম্ভাব্য শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এই পরিস্থিতিতে কোনো হঠকারী পদক্ষেপ না নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি শান্ত ও বিচক্ষণতার সঙ্গে মোকাবিলা করা হবে।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে স্টারমার বলেন, বাণিজ্য যুদ্ধ কারো জন্যই মঙ্গলজনক নয়। তাই সরকার এক্ষেত্রে একটি শান্ত, বাস্তবসম্মত এবং সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেবে। তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বৃহত্তর অর্থনৈতিক চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য আলোচনা চলছে।
সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সব শিল্প ও খাতের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিরোধী দলের নেতারা অবশ্য এই বিষয়ে সরকারের দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বৃহত্তর বাণিজ্য চুক্তি করতে না পারার সমালোচনা করেছেন। আবার কেউ ইউক্রেন আলোচনার মতো একটি ‘অর্থনৈতিক জোট’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে।
তবে স্টারমার এই ধরনের পদক্ষেপকে সমর্থন করেননি। তিনি মনে করেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের মধ্যে একটি ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার শামিল হবে।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রিজেট ফিলিপসনও বলেছেন, শুল্ক আরোপের সম্ভাব্য সব দিক বিবেচনা করে সরকার কাজ করছে। তিনি জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ব্রিটিশ জনগণের স্বার্থকে সবার উপরে রাখা হবে। বাণিজ্য যুদ্ধের মতো কোনো হঠকারী পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও তার প্রধান বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বিষয়টিকে ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছেন এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) জানিয়েছে, তারা এই পরিস্থিতিতে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে, যা বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য এবং অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এই ধরনের অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বিশ্ব বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে, যা বাংলাদেশের মতো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।