যুক্তরাষ্ট্রের দল, যুক্তরাজ্যে গর্ভপাত বিতর্কে নতুন মোড়!

যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত একটি সংগঠন, যারা গর্ভপাতের বিরোধী, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে তাদের কার্যক্রম অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের এই পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

সম্প্রতি প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ‘অ্যালায়েন্স ডিফেন্ডিং ফ্রিডম’ (এডিএফ) নামের এই সংগঠনটি যুক্তরাজ্যে তাদের প্রচার এবং অন্যান্য কার্যকলাপে গত বছর এক মিলিয়নের বেশি পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৩ কোটি টাকার বেশি) খরচ করেছে।

সংগঠনটি মূলত যুক্তরাজ্যে গর্ভপাত ক্লিনিকগুলোর বাইরে ‘বাফার জোন’ তৈরির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। বাফার জোন তৈরি হলে ক্লিনিকের কাছাকাছি স্থানে বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ করা কঠিন হয়ে পড়ে।

তাদের সমর্থন রয়েছে এমন এক ব্যক্তির মামলার খরচও তারা বহন করছে। এই ব্যক্তিকে বর্নমাউথের একটি গর্ভপাত ক্লিনিকের বাইরে বাফার জোন ভাঙার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত বছর জুন মাস পর্যন্ত এডিএফ ইউকের আয় ছিল ১৩ লক্ষ পাউন্ডের বেশি। এর মধ্যে ১১ লক্ষ ১৯ হাজার ৯৭৫ পাউন্ড ‘এডিএফ সাপোর্ট’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংগঠনটি তাদের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও আলোচনা করেছে, যারা গত মাসে যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন।

যুক্তরাজ্যে এডিএফ নিজেদের ‘খ্রিস্টান ও অন্যদের প্রকাশ্যে তাদের বিশ্বাস প্রচারের অধিকারের’ পক্ষে সমর্থনকারী হিসেবে বর্ণনা করে। তারা গর্ভপাত বিষয়ক ক্লিনিকগুলোর আশেপাশে বাফার জোন তৈরি করার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে প্রচারণা চালিয়ে আসছে।

এমনকী, যুক্তরাজ্যের আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে তারা বৈঠক করেছে এবং বিতর্কিত ‘সহায়তা-মৃত্যু বিল’-এর বিরুদ্ধেও তারা তাদের সমর্থন জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও সাবেক আইনজীবী মাইক জনসন এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এছাড়াও, এই সংগঠনের সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায়ও এডিএফ সমর্থন জুগিয়েছিল।

এডিএফের কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সংগঠন এখানে গর্ভপাত বিষয়ক অধিকার খর্ব করার চেষ্টা করছে।

তাঁদের মতে, এর ফলস্বরূপ নারীদের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।

এমএসআই রিপ্রোডাক্টিভ চয়েসেস ইউকের প্রধান লুইস ম্যাককাডেন বলেন, ‘নিরাপদ প্রবেশাধিকার অঞ্চল তৈরি করার আগে আমরা দেখেছি আমাদের ক্লিনিকের বাইরে নারীদের “খুনি” বলা হতো এবং শারীরিক বাধা দেওয়া হতো।’ ব্রিটিশ প্রেগন্যান্সি অ্যাডভাইসরি সার্ভিসের প্রধান নির্বাহী হেইডি স্টুয়ার্টও এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের প্রতিনিধি দল যুক্তরাজ্যে আসার আগে এডিএফসহ আরও কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। আগামী সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যে একটি বড় ধরনের অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনাও রয়েছে এডিএফের।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *