সেনাবাহিনীর গোপনীয়তা: সংঘর্ষ এড়াতে প্রযুক্তির ব্যবহার না করার কারণ?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন প্রভাবশালী সিনেটর টেড ক্রুজ। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, জানুয়ারিতে সংঘটিত একটি বিমান দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে সহযোগিতা করতে গিয়ে সেনাবাহিনী তথ্য গোপন করছে। ঐ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন ৬৭ জন।

সিনেটর ক্রুজ মনে করেন, জীবন রক্ষার পরিবর্তে সেনাবাহিনী তাদের “আমলাতান্ত্রিক স্বার্থ” রক্ষা করতে চাইছে।

সিনেটের বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও পরিবহন কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর ক্রুজ বুধবার এক শুনানিতে জানান, সেনাবাহিনী এখনো কংগ্রেসকে জানায়নি যে তারা কিভাবে সংঘর্ষ এড়ানোর প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এই প্রযুক্তিটি দুর্ঘটনার সময় বন্ধ ছিল।

সিনেটর ক্রুজ বলেন, “যদি ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার অন্য কোনো যাত্রীবাহী বিমানের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং এর ফলস্বরূপ যদি আবার ৬৭ জন নিহত হন, কারণ সেনাবাহিনী এডিএস-বি আউট (ADS-B Out) বন্ধ করার নীতি পরিবর্তনে রাজি হয়নি এবং মানুষের জীবন রক্ষার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, তবে সেই মৃত্যুর দায় সেনাবাহিনীর ওপর বর্তাবে।

ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) সামরিক বাহিনীকে তাদের বিমানের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য অটোমেটিক ডিপেন্ডেন্ট সার্ভেইল্যান্স ব্রডকাস্ট (Automatic Dependent Surveillance Broadcast – ADS-B) প্রযুক্তি বন্ধ করে উড়োজাহাজ চালানোর অনুমতি দিয়েছিল। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিমানের অবস্থান, উচ্চতা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জানা যায়। এছাড়াও আশেপাশের উড়োজাহাজগুলোর ওপর নজরদারি করা যায়।

সিনেটর ক্রুজ জানান, গত সপ্তাহে ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (NTSB) প্রাথমিক প্রতিবেদন বিষয়ক শুনানির পর থেকে সেনাবাহিনী এখনো পর্যন্ত ২০২৩ সালের ৯ই আগস্টের একটি স্মারক লিপি সরবরাহ করেনি। এই স্মারক লিপিতে ‘জাতীয় আকাশসীমায় এডিএস-বি আউট বন্ধের কার্যক্রম’ বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।

বেসামরিক ও সামরিক উভয় ধরনের উড়োজাহাজ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এই প্রযুক্তি বিমানের অবস্থান প্রতি সেকেন্ডে একবার আপডেট করে, যেখানে রাডারে প্রতি চার থেকে ছয় সেকেন্ড পর পর আপডেট পাওয়া যায়।

সিনেটর ক্রুজ আরও বলেন, “সেনাবাহিনী কেন কংগ্রেস বা আমেরিকান জনগণকে জানাতে চাইছে না যে, তারা কেন ডি.সি.এ.-এর (DCA) কাছাকাছি অন্যান্য উড়োজাহাজ এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের থেকে আংশিকভাবে দৃষ্টির অগোচরে ছিল?” তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “যদি সেনাবাহিনী তথ্য গোপন করা অব্যাহত রাখে, তাহলে এই কমিটি তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করবে।

গত সপ্তাহের শুনানিতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ম্যাথিউ ব্রামান জানান, দুর্ঘটনার সাথে জড়িত হেলিকপ্টারে এডিএস-বি আউট সিস্টেমের কার্যক্রম ও কার্যকারিতা এখনো তদন্তাধীন। তবে, সেনাবাহিনীর নীতি অনুযায়ী, ক্রু-কে এটি বন্ধ করে উড়োজাহাজ চালানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

সিনেটর এবং তদন্তকারীরা বলছেন, এই প্রযুক্তি জানুয়ারির দুর্ঘটনার সময় সাহায্য করতে পারতো, কারণ এটি রাডারের চেয়ে বেশি ঘন ঘন উড়োজাহাজের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *