উইসকনসিন সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনে রিপাবলিকান সমর্থিত প্রার্থীর পরাজয়, বিতর্কের কেন্দ্রে ধনকুবের এলন মাস্ক।
যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ব্র্যাড শিমেলকে পরাজিত করে জয়ী হয়েছেন ডেমোক্রেট সমর্থিত সুসান ক্রফোর্ড। এই ফলাফলের মাধ্যমে অঙ্গরাজ্যের সর্বোচ্চ আদালতে উদারনৈতিক বিচারকদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা বহাল থাকল, যা আগামী দিনে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্তগুলোকে প্রভাবিত করবে।
এই নির্বাচনে ধনকুবের এলন মাস্কের সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করা সত্ত্বেও তাঁর পছন্দের প্রার্থীর পরাজয় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
নির্বাচনে সুসান ক্রফোর্ডের জয়কে অনেকেই এলন মাস্কের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা হিসেবে দেখছেন। মাস্ক এই নির্বাচনে শিমেলের পক্ষে প্রায় ২৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ করেছিলেন।
তাঁর বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করা সত্ত্বেও পরাজয় প্রমাণ করে যে, জনগণের মধ্যে মাস্কের জনপ্রিয়তা আগের মতো নেই। এই নির্বাচনের ফল বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা তৈরি করেছে।
ডেমোক্রেট দলের নেতারা এই জয়কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এটিকে রিপাবলিকানদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে দেখছেন। তাঁদের মতে, জনগণের মধ্যে মাস্কের বিতর্কিত ভাবমূর্তি রিপাবলিকান দলের জন্য একটি উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর ডেমোক্রেট দলের পক্ষ থেকে মাস্ককে সরাসরি কটাক্ষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা হয়। যেখানে মাস্ককে ‘পরাজিত’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এমনকি, এই নির্বাচনের ফলকে আগামী নির্বাচনে ডেমোক্রেটদের জন্য একটি ইতিবাচক দিক হিসেবেও দেখা হচ্ছে। তাঁদের মতে, জনগণের মধ্যে মাস্কের নেতিবাচক ভাবমূর্তি রিপাবলিকানদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
অন্যদিকে, রিপাবলিকান দলের নেতারা এই পরাজয়কে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছেন। তাঁদের কেউ কেউ বলছেন, মাস্কের সমর্থন হয়তো ভোটারদের মধ্যে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি।
আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এই নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কিন্তু মাস্কের সম্পৃক্ততা ভোটারদের ভিন্নভাবে প্রভাবিত করেছে।
উইসকনসিনের নির্বাচনের পাশাপাশি, ফ্লোরিডাতে অনুষ্ঠিত দুটি বিশেষ নির্বাচনেও রিপাবলিকানদের জয় হয়েছে। তবে, এই জয়গুলো গত নভেম্বরের নির্বাচনের তুলনায় কম ব্যবধানে হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নির্বাচনগুলোর ফল আগামী দিনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উইসকনসিন সুপ্রিম কোর্টের এই নির্বাচন এবং অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনগুলোতে জনগণের রায় থেকে বোঝা যায়, মার্কিন রাজনীতিতে এখন অনেক পরিবর্তন আসছে। জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়ছে এবং তাঁরা তাঁদের অধিকার সম্পর্কে আরও বেশি সোচ্চার হচ্ছেন।
বিশেষ করে, শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদদের উপর জনগণের আস্থা আগের চেয়ে অনেক কমেছে। তাই, আগামী দিনে রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের সমর্থন পেতে হলে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান