সাবধান! এই ভিটামিনগুলি স্বাস্থ্যের চরম ক্ষতি করতে পারে!

ভিটামিন এ (Vitamin A) এবং ই (Vitamin E) সাপ্লিমেন্ট: স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং সচেতনতা।

বর্তমান সময়ে, ভিটামিন ও অন্যান্য খাদ্য পরিপূরক (supplement) ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে, যা নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাজারে সহজলভ্য এসব সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের আগে আমাদের কিছু বিষয়ে অবগত থাকা জরুরি।

অনেক ক্ষেত্রে, আমরা না বুঝেই বিভিন্ন ভিটামিন সেবন করি, যা শরীরের জন্য উপকারী হওয়ার বদলে ক্ষতির কারণ হতে পারে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ভিটামিন এ এবং ই সাপ্লিমেন্ট নিয়ে কিছু উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন এ এবং ই -এর অতিরিক্ত গ্রহণ শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এই দুটি ভিটামিন ফ্যাট-সলিউবল বা চর্বি-দ্রবণীয় হওয়ায় শরীরে জমা হতে পারে।

অতিরিক্ত ভিটামিন এ গ্রহণের ফলে লিভারের ক্ষতি, হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, এমনকি জন্মগত ত্রুটিও দেখা দিতে পারে। ভিটামিন এ-এর দৈনিক নিরাপদ মাত্রা (Upper Intake Level – UL) হলো ৩,০০০ মাইক্রোগ্রাম।

গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এই বিষয়ে আরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন, কারণ অতিরিক্ত ভিটামিন এ ভ্রূণের বিকাশে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

আমাদের দেশে ভিটামিন এ-এর অভাব পূরণের জন্য খাদ্যতালিকায় সবুজ শাকসবজি ও ফলমূলের গুরুত্ব অপরিসীম। পালং শাক (spinach), গাজর (carrots), মিষ্টি আলু (sweet potatoes) এবং পাকা হলুদ রঙের ফল (যেমন – পেঁপে) ভিটামিন এ-এর ভালো উৎস।

এইসব প্রাকৃতিক উৎস থেকে ভিটামিন এ গ্রহণ করা স্বাস্থ্যকর এবং নিরাপদ।

অন্যদিকে, ভিটামিন ই-এর ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ উদ্বেগের কারণ হতে পারে। ভিটামিন ই-এর সিনথেটিক রূপ, যা আলফা-টোকোফেরল নামে পরিচিত, কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

এটি প্রোস্টেট ও ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, এমনকি রক্ত জমাট বাঁধার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়ও বাধা দিতে পারে। ভিটামিন ই সাধারণত বাদাম, বীজ, এবং উদ্ভিজ্জ তেলে পাওয়া যায়।

কাঠবাদাম (almonds), সূর্যমুখী বীজ (sunflower seeds), এবং সরিষার তেল (mustard oil) ভিটামিন ই-এর ভালো উৎস।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ভিটামিন সাপ্লিমেন্টগুলি ঔষধের মতো নিয়ন্ত্রিত না হওয়ায়, এদের গুণমান এবং উপাদান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া কঠিন।

তাই, নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ডের পণ্য বেছে নেওয়া এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক ডোজ মেনে চলা জরুরি। এছাড়াও, আমাদের খাদ্যাভ্যাসকে আরও উন্নত করতে হবে, যাতে প্রয়োজনীয় ভিটামিনগুলো আমরা খাবারের মাধ্যমেই পেতে পারি।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম অপরিহার্য।

সুতরাং, ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের আগে সতর্ক হওয়া এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক সঠিক জ্ঞান রাখা খুবই জরুরি। সবার সুস্থ জীবন নিশ্চিত করতে সচেতনতাই হলো মূল মন্ত্র।

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *