নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস-এর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির মামলা খারিজ করে দিয়েছেন একজন ফেডারেল বিচারক। এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে, কারণ বিচারক এই মামলার প্রেক্ষাপটে বিচার বিভাগের পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
বুধবার এই মামলার শুনানিতে বিচারক ডেيل ই. হো ঘোষণা করেন যে, মামলাটি খারিজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এর পেছনে বিচার বিভাগের যুক্তি ছিল বিতর্কিত। অভিযোগ উঠেছে, ডেমোক্র্যাট এরিক অ্যাডামসকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য এই মামলা খারিজ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। বিচারক এই অভিযোগের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বিচারক হো স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, মামলার মেরিট নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না, তবে প্রসিকিউটরদের মামলাটি এগিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য করা যায় না। একইসঙ্গে, তিনি সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, “এখানে সবকিছুই একটি সমঝোতার ইঙ্গিত দেয়: অভিবাসন নীতিতে ছাড়ের বিনিময়ে অভিযোগ খারিজ।”
বিচারক আরও উল্লেখ করেন যে, মেয়রের স্বাধীনতা ফেডারেল সরকারের ইচ্ছার চেয়ে তাঁর নির্বাচনী এলাকার মানুষের প্রতি বেশি নির্ভরশীল হওয়া উচিত।
মেয়র অ্যাডামস আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি শুরু থেকেই বলে আসছি, এই মামলাটির কোনো ভিত্তি ছিল না এবং আমি কোনো ভুল করিনি। আমি সবসময় এই শহরের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ। কোনো বিশেষ স্বার্থ বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি নয়, বরং সাধারণ নিউ ইয়র্কবাসীর প্রতি আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে।”
আদালতের বাইরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি নির্বাচনে জিতব।”
আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন এরিক অ্যাডামস-এর পুনরায় নির্বাচনের সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল হয়েছে। তিনি বর্তমানে আসন্ন ডেমোক্রেটিক প্রাইমারির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যেখানে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন প্রাক্তন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো এবং আরও কয়েকজন ডেমোক্র্যাট। এই প্রতিদ্বন্দ্বীরা মনে করেন, ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে মেয়র অ্যাডামস এখন নিউ ইয়র্কবাসীর স্বার্থ কতটা রক্ষা করতে পারবেন, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
উল্লেখ্য, এই মামলার তদন্তে জানা যায় যে, মেয়র অ্যাডামস তুরস্কের এক কর্মকর্তার কাছ থেকে অবৈধভাবে নির্বাচনী অনুদান গ্রহণ করেছেন এবং এর বিনিময়ে তুরস্ককে একটি কূটনৈতিক ভবন নির্মাণে সহায়তা করেছেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস