মার্কিন উপদেষ্টার জি-মেইল ব্যবহার: চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ-সহ আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ব্যক্তিগত ই-মেইল ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি কাজকর্ম করেছেন—এমন অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, কেননা এই ধরনের যোগাযোগের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে।

জানা গেছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ-সহ ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (National Security Council – NSC) আরও কয়েকজন সদস্য তাঁদের ব্যক্তিগত জিমেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে সরকারি কাজকর্ম করেছেন। *দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট*-এর একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

পত্রিকাটি জানিয়েছে, তারা এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনা করেছে এবং তিনজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ওয়াল্টজের জিমেইল অ্যাকাউন্টে তাঁর সময়সূচী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র আসত, যা নিরাপত্তা লঙ্ঘনের একটি গুরুতর দৃষ্টান্ত।

এমনকি, ওয়াল্টজের এক সহযোগী জিমেইল ব্যবহার করে অন্য সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সামরিক বিষয় এবং অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আলোচনা করেছেন, যেখানে তাঁরা সরকারি ই-মেইল ব্যবহার করতেন।

এই বিষয়ে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র অবশ্য বলেছেন, ওয়াল্টজ কোনো গোপন তথ্য আদান-প্রদানের জন্য জিমেইল ব্যবহার করেননি।

এই ঘটনার আগে, ওয়াল্টজের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, তিনি একটি ‘Signal’ গ্রুপে একজন সাংবাদিককে যুক্ত করেছিলেন, যেখানে শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তারা ইয়েমেনে একটি বিমান হামলার পরিকল্পনা ও উদযাপন করেছিলেন।

এই ঘটনায় ডেমোক্র্যাট দল ওয়াল্টজ এবং প্রতিরক্ষা সচিবের পদত্যাগ দাবি করেছেন।

এর আগে, হিলারি ক্লিনটন যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, তখন তিনি ব্যক্তিগত ই-মেইল সার্ভার ব্যবহার করেছিলেন, যা নিয়ে ওয়াল্টজ তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।

ডেমোক্র্যাট দলের নেতারা বলছেন, ওয়াল্টজ জাতীয় নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার যোগ্য নন। হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের ডেমোক্রেটিক নেতা হাকিম জেফ্রিস বলেছেন, ওয়াল্টজ এবং হেগসেথকে অবিলম্বে বরখাস্ত করা উচিত যদি তাঁরা পদত্যাগ করতে রাজি না হন।

বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিশেষ করে, সরকারি গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ই-মেইল ব্যবহারের নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যক্তিগত ই-মেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।

তথ্য সূত্র: *দ্য গার্ডিয়ান*

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *