আদেশ অমান্য? ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা একটি আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ভেনেজুয়েলার কিছু নাগরিককে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে।

বৃহস্পতিবার বিচারক জেমস বোয়াসবার্গের আদালতে এই বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত হয়, যখন ট্রাম্প প্রশাসনAlien Enemies Act নামক একটি পুরোনো আইনের আশ্রয় নিয়ে ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের বিতাড়িত করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এই আইনের অধীনে, সরকার যদি কোনো বিদেশি নাগরিককে রাষ্ট্রের জন্য হুমকি মনে করে, তাহলে তাকে দ্রুত বিতাড়িত করতে পারে।

বিতাড়িত হওয়া ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের একটি দলের আইনজীবীরা এর বিরুদ্ধে আদালতে যান।

গত ১৫ই মার্চ বিচারক বোয়াসবার্গ এক শুনানিতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দেন, বিতাড়নের উদ্দেশ্যে কোনো বিমান যেন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত অভিবাসীদের নিয়ে অন্য কোনো দেশে না যায়।

কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, বিচারকের এই নির্দেশের পরেও দুটি ফ্লাইটে করে একশ জনের বেশি ভেনেজুয়েলার নাগরিককে এল সালভাদরে পাঠানো হয়।

এই ঘটনার পরই বিচারক বোয়াসবার্গ ঘটনার তদন্ত শুরু করেন।

তিনি জানতে চান, কারা এই বিতাড়নের নির্দেশ দিয়েছিল এবং এর ফল কী হবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের আইনজীবীরা যুক্তি দেখাচ্ছেন, বিচারকের মৌখিক নির্দেশ আসলে কোনো ‘বাধ্যতামূলক আদেশ’ ছিল না।

তাদের মতে, বিচারক পরে যে লিখিত আদেশ দিয়েছিলেন, সেটিই এক্ষেত্রে চূড়ান্ত।

তবে ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের আইনজীবীরা বলছেন, বিচারকের লিখিত আদেশেও মৌখিক নির্দেশের প্রতিফলন ছিল।

তাদের মতে, বিতাড়ন বন্ধ করার বিষয়ে আদালতের নির্দেশ ছিল অত্যন্ত স্পষ্ট।

তাদের বক্তব্য, আদালতের মূল উদ্দেশ্য ছিল, বিতাড়িত ব্যক্তিদের যেন কোনো বিদেশি সরকারের হাতে তুলে দেওয়া না হয়।

শুনানিতে, সম্ভবত, প্রশাসন তাদের কিছু গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারের কথাও বলতে পারে।

তারা বিচারককে কিছু তথ্য দিতে অস্বীকার করতে পারে, যা তাদের মতে ‘রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা’র অন্তর্ভুক্ত।

প্রশাসনের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তাঁরা আদালতের কাছে জানতে চাওয়া কিছু প্রশ্নের উত্তর দেবেন না।

এর মধ্যে বিতাড়নের জন্য দুটি বিমান কখন যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমা ত্যাগ করে, বিতাড়িত ব্যক্তিদের কখন যুক্তরাষ্ট্রের হেফাজত থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল – এমন কিছু তথ্যও রয়েছে।

এখন দেখার বিষয়, বিচারক এই বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেন।

বিষয়টি কেবল একটি আদালতের লড়াই নয়, বরং অভিবাসন নীতি, নির্বাহী ক্ষমতার সীমা, এবং মানবাধিকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলমান বিতর্কের একটি অংশ।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *