এলোন মাস্কের দুঃসময়! বিরাট ক্ষতির মুখে, হতাশ বিনিয়োগকারীরা

এলোন মাস্কের জীবনে যেন এখন দুর্যোগের ঘনঘটা। একদিকে টেসলার বিক্রি কমে যাওয়া, অন্যদিকে রাজনৈতিক ময়দানেও তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি, বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করেও উইসকনসিন সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে জেতাতে পারেননি তিনি।

সব মিলিয়ে, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হলেও, মাস্কের জনপ্রিয়তা এবং কোম্পানির বাজার মূল্যে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, টেসলার বিক্রি আগের প্রান্তিকের তুলনায় ১৩ শতাংশ কমেছে। একই সময়ে, তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর আয় বেড়েছে ৬০ শতাংশ।

এটি মাস্কের জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ। কারণ, একদিকে যেমন তার কোম্পানির আর্থিক অবস্থা দুর্বল হচ্ছে, তেমনই গ্রাহকদের মধ্যে তার ভাবমূর্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

রাজনৈতিক অঙ্গনেও মাস্কের দৌড়ঝাঁপ খুব একটা সফল হয়নি। তিনি উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে বিপুল অর্থ খরচ করেছিলেন। এমনকি, স্থানীয় একটি অনুষ্ঠানে তিনি বিশাল পনিরের টুপি পরে হাজির হয়েছিলেন এবং ভোটারদের মধ্যে কয়েক মিলিয়ন ডলার বিতরণ করেছিলেন।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার প্রার্থী হেরে যান, যা মাস্কের জন্য ছিল একটি বড় ধাক্কা।

মার্কিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মাস্ক সম্ভবত খুব শীঘ্রই সরকারের “বিশেষ কর্মচারী” পদ থেকেও অব্যাহতি নিতে পারেন। এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। কারণ, তারা মনে করছেন, মাস্ক হয়তো এবার তার কোম্পানির দিকে বেশি মনোযোগ দেবেন।

জানুয়ারি মাস থেকে মাস্কের ব্যক্তিগত সম্পদের এক চতুর্থাংশেরও বেশি কমে গেছে। বর্তমানে তার মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৩২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে টিকিয়ে রেখেছে।

তবে, তার এই বিপুল সম্পদও যেন এখন চাপের মুখে।

টেসলার প্রধান হিসেবে মাস্কের কর্মকাণ্ড সরাসরি কোম্পানির উপর প্রভাব ফেলে। তার ডানপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কারণে, কোম্পানির মূল গ্রাহক, যারা পরিবেশ-সচেতন এবং বামপন্থী, তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

মাস্ক কীভাবে এই গ্রাহকদের হারানো সমর্থন পুনরুদ্ধার করবেন, তা এখন একটি বড় প্রশ্ন। এমনকি, ট্রাম্পের সঙ্গে মিলে তিনি যে চেষ্টা করেছিলেন, সেটিও খুব একটা কাজে আসেনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিপুল পরিমাণ অর্থ অনেক কিছু কিনতে পারে, কিন্তু সবকিছু নয়। মাস্কের ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছে। টেসলার ক্রমাগত বিক্রি কমে যাওয়া এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যর্থতা, তাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, শুধু টাকার জোরে সব জয় করা যায় না।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *