বিশ্বজুড়ে ফুলের বাগান প্রেমীদের জন্য নেদারল্যান্ডসের কুইকেনহফ যেন এক স্বর্গরাজ্য। আমস্টারডামের কাছে অবস্থিত এই মনোমুগ্ধকর বাগানটি প্রতি বছর বসন্তকালে আট সপ্তাহের জন্য খোলা হয়, আর এই সময়টাতে এখানে ভিড় করেন অগণিত পর্যটক।
তাদের প্রধান আকর্ষণ হলো নানা রঙের, আকারের, আর প্রজাতির লাখ লাখ টিউলিপ ফুল, যা দর্শকদের মন জয় করে নেয়। শুধু টিউলিপই নয়, হাইএসিন্থ, ড্যাফোডিলসহ আরও নানা ধরনের ফুল এখানে ফোটে, যা এই বাগানটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
কুইকেনহফের প্রধান আকর্ষণ এখনকার ‘সেলফি’ সংস্কৃতি। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগে ছবি তোলার প্রবণতা বেড়েছে, তাই বাগান কর্তৃপক্ষও এই বিষয়টির ওপর জোর দিয়েছে।
পর্যটকদের ছবি তোলার সুবিধার জন্য এখানে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ স্থান। ফুলের তোরণ, আকর্ষণীয় সোফা এবং কাঠের তৈরি বিশাল আকারের ক্লগ জুতা—এসব ছবি তোলার জন্য দারুণ। নেদারল্যান্ডস ট্যুরিজম বোর্ডও সুন্দর ছবি তোলার জন্য কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকে, যেমন—ছবিটিকে আরও আকর্ষণীয় করতে সাবজেক্টটিকে একটু একপাশে রেখে ছবি তুলুন।
কুইকেনহফের এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতি বছর প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ আসে। বাগানের কর্মীরা অনেক যত্ন সহকারে প্রায় ৭০ লক্ষ ফুলের বাল্ব রোপণ করেন, যার ফলে দর্শনার্থীরা এক মনোরম ফুলের জগৎ দেখতে পান।
এই বাগানের একজন মালী প্যাট্রিক ভ্যান ডাইক বলেন, “এখানে সবসময় কিছু না কিছু ফুল ফোটে, আর সম্ভবত সে কারণেই সবাই খুশি থাকে। সবসময় দেখার মতো কিছু না কিছু থাকেই।”
তবে, সবসময় সবাই ছবি তোলার এই আনন্দে শামিল হতে পারে না। কিছু স্থানীয় ফুল চাষি আছেন, যারা পর্যটকদের কারণে তাদের ফুলের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চিন্তিত।
ছবি তোলার জন্য অনেক সময় পর্যটকেরা তাদের ক্ষেতের ভেতর ঢুকে পড়েন, যা ফুলের ক্ষতি করে। তাই, তারা তাদের ক্ষেত রক্ষার জন্য সাইনবোর্ড এবং বেড়া ব্যবহার করেন।
কুইকেনহফ বাগান শুধু নেদারল্যান্ডসের নয়, বরং বিশ্বজুড়ে সৌন্দর্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। যারা ফুল ভালোবাসেন, তাদের জন্য এই বাগান এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান