ভয়ঙ্কর! ফুটবল মাঠের নিচে: রোমান সৈন্যদের গণকবর!

ভিয়েনায় ফুটবল মাঠের নিচে লুকানো, প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের এক ভয়ংকর যুদ্ধক্ষেত্রের সন্ধান মিলেছে। অস্ট্রিয়ার এই শহরে, মাঠ সংস্কারের সময় শ্রমিকরা এক বিশাল গণকবরের সন্ধান পান, যেখানে প্রথম শতাব্দীর রোমান সাম্রাজ্যের সৈন্যদের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের পর জানা যায়, এটি সম্ভবত জার্মান উপজাতিদের সঙ্গে রোমান সৈন্যদের এক ভয়াবহ যুদ্ধের স্থান ছিল।

ভিয়েনার সিমারিং এলাকার ওই ফুটবল মাঠটিতে ১৩০ জনের বেশি মানুষের কঙ্কাল আবিষ্কৃত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্য ইউরোপে এ ধরনের আবিষ্কার সত্যিই বিরল। কারণ, রোমান সৈন্যদের সাধারণত সমাধিস্থ না করে আগুনে পোড়ানো হতো।

খনন দলের প্রধান মিশেলা বাইন্ডার জানিয়েছেন, “যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত সৈন্যদের এমন সন্ধান রোমান ইতিহাসে সত্যিই বিরল। জার্মানির বিভিন্ন স্থানে অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া গেলেও, এত মানুষের কঙ্কাল একসঙ্গে পাওয়ার ঘটনা আগে ঘটেনি।” কঙ্কালগুলোর শরীরে গভীর ক্ষতচিহ্ন ছিল, যা যুদ্ধের প্রমাণ দেয়। তাঁদের অনেকের মাথা, বুক এবং কোমরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

ভিয়েনা শহরের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধান ক্রিস্টিনা অ্যাডলার-ওল্ফলের মতে, “ক্ষতগুলো যুদ্ধের আঘাতের কারণেই হয়েছে, কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ফলে নয়। তরোয়াল, বর্শা এবং ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতে তাঁদের মৃত্যু হয়েছিল।”

দেখা গেছে, নিহত সবাই পুরুষ ছিলেন এবং তাঁদের বয়স ছিল ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। তাঁদের দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো ছিল। কার্বন-১৪ পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, দেহাবশেষগুলো খ্রিস্টীয় ৮০ থেকে ১৩০ সালের মধ্যেকার। কবরের মধ্যে পাওয়া বর্ম, হেলমেটের কিছু অংশ, এবং ক্যালিগায়ে নামক বিশেষ রোমান সামরিক জুতার পেরেকগুলি এই সময়কালের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। একটি ছোরা, যা প্রথম শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে দ্বিতীয় শতাব্দীর শুরুর দিকে ব্যবহৃত হতো, তাও সেখানে পাওয়া গেছে।

আর্কিওলজিস্টদের ধারণা, সম্ভবত সম্রাট ডমিশিয়ানের (৮৬-৯৬ খ্রিস্টাব্দ) দানিয়ুব অভিযানের সঙ্গে এই ঘটনার যোগসূত্র রয়েছে। তাঁরা এও মনে করছেন, ভিয়েনা শহরের গোড়াপত্তনের সঙ্গেও এই আবিষ্কারের সম্পর্ক থাকতে পারে। প্রত্নতাত্ত্বিকরা ডিএনএ এবং স্ট্রনশিয়াম আইসোটোপ বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিহত যোদ্ধাদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছেন, যা থেকে জানা যেতে পারে তাঁরা কোন পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *