মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মার্চ মাসে ব্যাপক হারে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা এসেছে, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত মাসে প্রায় দুই লক্ষ পঁচাত্তর হাজারেরও বেশি কর্মী ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছেন। কোভিড-১৯ মহামারীর পর এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যা।
এর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ফেডারেল সরকারের নেওয়া কিছু পদক্ষেপকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার একাই দুই লক্ষ সতেরো হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। এই সংখ্যাটি মার্চ মাসের মোট ছাঁটাই হওয়া কর্মীর প্রায় ৮০ শতাংশ।
“চ্যালেঞ্জার গ্রে অ্যান্ড ক্রিসমাস”-এর তথ্য অনুযায়ী, এটি ২০২০ সালের এপ্রিল ও মে মাসের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা।
ফেডারেল সরকারের কর্মসংস্থান বিষয়ক দপ্তর ‘ডগ’-এর (DOGE) নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে এমনটা হয়েছে বলে জানা যায়। সরকারি এই দপ্তরটি বিভিন্ন খাতে অর্থ বরাদ্দ কমানো, চুক্তি বাতিল করা এবং কর্মীদের ছাঁটাইয়ের মতো পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ব্যাপক ছাঁটাইয়ের সরাসরি প্রভাব পড়বে স্থানীয় অর্থনীতিতে। ফেডারেল সরকারের বাইরে, প্রযুক্তি ও খুচরা বাণিজ্য খাতেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই হয়েছে।
ফেব্রুয়ারী মাসের তুলনায় মার্চে ছাঁটাইয়ের সংখ্যা প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া, গত বছরের মার্চ মাসের তুলনায় এই বছর ছাঁটাইয়ের সংখ্যা বেড়েছে ২০৫ শতাংশ।
যদিও এই ছাঁটাইয়ের তাৎক্ষণিক প্রভাব শ্রমবাজারের উপর সরাসরি পড়বে না, কারণ অনেক কর্মীকে বেতনসহ নোটিশ পিরিয়ডে রাখা হয়েছে। তবে, এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
অর্থনীতিবিদ গ্রেগরি ড্যাকো এক সাক্ষাৎকারে জানান, “সরকারের এমন নির্বিচারে ব্যয় সংকোচনের কোনো ইতিবাচক প্রভাব নেই। বরং এর ফলে বেসরকারি খাতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে, প্রায় ২৭টি সংস্থার ফেডারেল কর্মী ও ঠিকাদারসহ ২ লক্ষ ৮০ হাজারেরও বেশি কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও, ফেডারেল সহায়তা কমানো বা চুক্তি বাতিলের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ও অলাভজনক সংস্থাগুলোতেও কর্মী ছাঁটাই হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজার বেশ কয়েক বছর ধরেই শক্তিশালী ছিল, তবে বর্তমানে কর্মী নিয়োগের হার কমে যাওয়ায় বাজারের স্বাভাবিক গতি কিছুটা কমেছে। আগামীকালের সরকারি প্রতিবেদনে এই পরিস্থিতির আরও বিস্তারিত চিত্র পাওয়া যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন