রিয়াল মাদ্রিদের তারকা ক্যারোলিন উইয়ার: নীরব থেকেই মাঠ কাঁপানো!

স্কটল্যান্ডের ফুটবল খেলোয়াড় ক্যারোলিন ওয়েয়ার, যিনি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে মাঠ মাতান, তাঁর জীবন ও ফুটবল খেলার গল্প নিয়ে নতুন একটি তথ্যচিত্র মুক্তি পেতে যাচ্ছে। ‘গ্যালাকটিকা’ নামের এই তথ্যচিত্রে ওয়েয়ারের ফুটবল জীবনের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে।

এই মিডফিল্ডারের ফুটবল খেলার শুরুটা হয়েছিল ডুনফার্মলাইনের এক উঠোনে, যেখানে তিনি ছোটবেলায় রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি পরে খেলতেন। ফুটবলের প্রতি তাঁর এই ভালোবাসা এবং রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলার স্বপ্ন ছিল চোখে পড়ার মতো।

পেশাদার ফুটবল জীবনে ওয়েয়ারের উত্থান বেশ দ্রুত হয়েছে। ম্যানচেস্টার সিটি থেকে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন।

২০২২ সালে স্প্যানিশ ক্লাবে যোগ দিয়েই তিনি দারুণ পারফর্ম করেন, সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৮টি গোল করেন। কিন্তু ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে স্কটল্যান্ড দলের হয়ে খেলার সময় এক গুরুতর ইনজুরিতে (এসিএল) আক্রান্ত হয়ে এক বছরের জন্য মাঠের বাইরে চলে যান তিনি।

তবে, ইনজুরি কাটিয়ে তিনি আবার ফিরে এসেছেন এবং নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন। তথ্যচিত্রটিতে তাঁর এই ফিরে আসার গল্পও তুলে ধরা হয়েছে।

মাঠের ভেতরের ঘটনার পাশাপাশি ওয়েয়ারের ব্যক্তিগত জীবনের নানা দিকও এতে দেখা যাবে। যেমন, তাঁর একটি বিশেষ গাড়ির প্রতি ভালোবাসা এবং পোষা কুকুরের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাবে।

ওয়েয়ারের সতীর্থদের কাছে তিনি কতটা প্রিয়, তা তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের মধ্যে স্পষ্ট। কলম্বিয়ার উইঙ্গার লিন্ডা কাইসেদো, যিনি বিশ্বকাপে জার্মানির বিপক্ষে গোল করেছিলেন, ওয়েয়ারকে তাঁর জার্সি উপহার দিয়েছেন।

ওয়েয়ার এই তথ্যচিত্রটিকে একটি বিশাল সম্মান হিসেবে দেখছেন। তিনি মনে করেন, রিয়ালের হয়ে খেলার কারণে তাঁর খেলার কৌশল আরও উন্নত হয়েছে।

নিজের ভূমিকা সম্পর্কে ওয়েয়ার বলেন, “আমার খেলার ধরনটা একটু আলাদা। কোচ আমাকে ১০ নম্বর পজিশনে খেলার স্বাধীনতা দেন এবং আমি সেই সুযোগটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করি।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আমি মনে করি, এই ক্লাবে আসার পর একজন মানুষ হিসেবে আমার অনেক বিকাশ হয়েছে। আমি নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছি এবং রিয়াল মাদ্রিদ আমাকে শুরু থেকেই সেই স্বাধীনতা দিয়েছে।”

ক্যারোলিন ওয়েয়ার এখন স্কটল্যান্ড দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। তাঁর প্রধান লক্ষ্য হলো, আরও একটি বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা।

তিনি বলেন, “আমি হয়তো দলের সবচেয়ে বেশি কথা বলা খেলোয়াড় নই, তবে আমি আমার কাজ দিয়ে উদাহরণ তৈরি করতে চাই।” ওয়েয়ারের মতে, নারী ফুটবলকে সমাজে আরও বেশি পরিচিত করানো দরকার।

স্কটল্যান্ডের তরুণ ছেলেমেয়েদের কাছে তিনি নারী ফুটবলকে স্বাভাবিকভাবে তুলে ধরতে চান।

স্কটিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের নারী ও মেয়েদের ফুটবল বিভাগের প্রধান শার্লি মার্টিন মনে করেন, ওয়েয়ারের মতো একজন ‘গ্যালাকটিকা’ খেলোয়াড় দলে থাকাটা তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা।

তিনি বলেন, “ডুনফার্মলাইনের একজন স্থানীয় মেয়ে, যিনি রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবে খেলেন, এটা সত্যিই রূপকথার মতো। তরুণ প্রজন্মের কাছে এটা প্রমাণ করে যে, তারাও পারবে।”

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *