ব্ল্যাক কান্ট্রি, নিউ রোড: ভাঙনের পরে নতুন পথে যাত্রা!

ব্ল্যাক কান্ট্রি, নিউ রোড: নতুন পথে, নতুন শব্দ

ব্রিটিশ ব্যান্ড ব্ল্যাক কান্ট্রি, নিউ রোড তাদের নতুন অ্যালবাম ‘ফরেভার হাউলং’ নিয়ে ফিরে এসেছে, যা তাদের পুরনো অ্যালবাম ‘এন্টস ফ্রম আপ দেয়ার’-এর থেকে বেশ ভিন্ন। ২০১৬ সালের শেষের দিকে গঠিত এই ব্যান্ডটি তাদের প্রথম অ্যালবাম প্রকাশের পরেই শ্রোতাদের মন জয় করে নেয়।

তবে, তাদের পুরনো গানের ধারা থেকে সরে এসে নতুন কিছু করার চ্যালেঞ্জ ছিল, কারণ তাদের প্রধান শিল্পী, আইজ্যাক উড, অ্যালবাম প্রকাশের আগেই ব্যান্ড ছেড়ে চলে যান।

আইজ্যাক উডের কণ্ঠস্বরের বৈশিষ্ট্য ছিল, যা ব্যান্ডের গানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। তার প্রস্থানের পর, ব্যান্ডের সদস্যরা নতুন করে পথচলার সিদ্ধান্ত নেয়।

তারা পুরনো গানগুলো বাদ দিয়ে একেবারে নতুন গান তৈরি করা শুরু করে। এই পরিবর্তনের ফলস্বরূপ, ‘ফরেভার হাউলং’ অ্যালবামটি তৈরি হয়েছে, যা তাদের নতুন দিকের একটি প্রমাণ।

নতুন অ্যালবামে ব্যান্ডের শব্দে এসেছে পরিবর্তন। পুরনো ‘স্প্রেখগেসাং’ ধারার পরিবর্তে, তারা এখন হালকা, শান্ত ও সুরের দিকে মনোযোগ দিয়েছে।

স্টিভ রাইখের সুরের প্রভাব এখনো বিদ্যমান, তবে এখানে পিয়ানো, অ্যাকোস্টিক গিটার, ব্যাঞ্জো, ম্যান্ডোলিন এবং বায়ু-যন্ত্রের ব্যবহার গানের মাধুর্য বাড়িয়েছে। এমনকি, অ্যালবামের ‘টাইটেল ট্র্যাক’-এ শোনা যায়, যেন কোনো স্কুলের অনুষ্ঠানে সকলে মিলে রেকর্ডার বাজাচ্ছে।

আইজ্যাক উডের অনুপস্থিতিতে, টাইলার হাইড, জর্জিয়া এলারি এবং মে কারশ তাদের কণ্ঠ দিয়েছেন। তাদের সম্মিলিত কণ্ঠ ‘মেরি’ গানটিতে এক ভিন্নতা এনেছে।

অ্যালবামের গানগুলোতে হঠাৎ ছন্দ পরিবর্তন, কথার মাঝে চতুর্থ দেওয়ালের ভাঙন, এবং দীর্ঘায়িত সুরের ব্যবহার শ্রোতাদের কৌতূহলী করে তোলে। সমালোচকরা মনে করেন, এই অ্যালবামের গানগুলো ১৯৭০-এর দশকের ব্রিটিশ ‘ক্যান্টারবেরি সিন’ ঘরানার প্রগ্রেসিভ রক দ্বারা প্রভাবিত।

‘ফরেভার হাউলং’ অ্যালবামটি একদিকে যেমন তাদের শৈল্পিক পরিবর্তনের প্রমাণ, তেমনিভাবে গভীর বিষয়গুলিকেও ছুঁয়ে যায়।

‘ফর দ্য কোল্ড কান্ট্রি’ গানটিতে একজন নাইট তার ভূতের সঙ্গে ঘুড়ি ওড়ানোর গল্প শোনানো হয়েছে। ‘সালেম সিস্টার্স’ গানটি প্রথমে গ্রীষ্মের পার্টির মতো শোনা গেলেও, পরে তা আগুনে পোড়ানোর দৃশ্যে পরিণত হয়।

‘সক্স’ গানটিতে বর্তমান সময়ের অস্থিরতা এবং উদ্বেগের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

কিছু ক্ষেত্রে, মনে হয় যেন ব্ল্যাক কান্ট্রি, নিউ রোড তাদের গানের জটিলতা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। তবে তাদের সুরের মাধুর্য অনেক কঠিন মুহূর্তকেও সহজ করে তোলে।

‘হ্যাপি বার্থডে’র মতো গানগুলিতে সুরের উত্থান-পতন খুবই আকর্ষণীয়।

সব মিলিয়ে, ‘ফরেভার হাউলং’ একটি পরীক্ষামূলক অ্যালবাম, যেখানে ব্ল্যাক কান্ট্রি, নিউ রোড তাদের নতুন দিক আবিষ্কার করেছে।

পুরনো দিনের অনেক ভক্ত হয়তো তাদের আগের গানগুলো মিস করেন। তবে, এই অ্যালবামটি একটি সাহসী পদক্ষেপ, যা তাদের সৃজনশীলতার প্রমাণ। বাংলাদেশের সঙ্গীতপ্রেমীরাও হয়তো এই ব্যান্ডের নতুন পথচলা উপভোগ করবেন।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *