আতঙ্কে বাজার! ট্রাম্পের শুল্ক নিয়ে তোলপাড়!

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির জেরে বিশ্বজুড়ে অস্থির হয়ে উঠেছে বাজার। এর ফলস্বরূপ, বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও ফেলতে পারে মারাত্মক প্রভাব।

বিশেষ করে, তৈরি পোশাক শিল্পের মতো প্রধান রপ্তানি খাতে দেখা দিতে পারে বড় ধরনের সংকট।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে। এর ফলে শেয়ার বাজারগুলোতে দরপতন শুরু হয়েছে এবং বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন।

বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে অনেক দেশই তাদের বাণিজ্য নীতি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কমে যায়, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়।

বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত তৈরি পোশাক, চামড়া ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল। বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে, এই রপ্তানি খাতে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।

কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্যগুলোর চাহিদা কমে যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে, তাহলে পোশাকের দাম বেড়ে যাবে এবং ক্রেতারা অন্য দেশ থেকে পোশাক কিনতে উৎসাহিত হবে।

এতে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কমে যাবে এবং দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাণিজ্য যুদ্ধ বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) একজন ঊর্ধ্বতন গবেষক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হয়ে জানান, “শুল্কের কারণে বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি হলে, আমাদের রপ্তানি খাতে চরম সংকট দেখা দিতে পারে।

আমাদের এখনই বিকল্প বাজার খুঁজে বের করতে হবে এবং বাণিজ্য চুক্তিগুলো নতুন করে পর্যালোচনা করতে হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “টাকার অবমূল্যায়ন হলে রপ্তানিকারকদের সুবিধা হতে পারে, তবে আমদানি ব্যয় বেড়ে মূল্যস্ফীতি হতে পারে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ওপর প্রভাব ফেলবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ ও বাণিজ্য বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই পরিস্থিতিতে সরকারকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দ্রুত বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা করে শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় কৌশল তৈরি করতে হবে।

এছাড়াও, রপ্তানি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন বাণিজ্য চুক্তি এবং শুল্কমুক্ত সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করতে হবে।

বর্তমানে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য। তবে বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে যদি রপ্তানি কমে যায়, তাহলে রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারকে আমদানি কমাতে এবং স্থানীয় উৎপাদনে জোর দিতে হবে।

বিশ্ব অর্থনীতির এই অনিশ্চয়তার সময়ে, বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকা। দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে হলে, সময়োপযোগী নীতি গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করা অপরিহার্য।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *