ছেলের প্রতি ঘৃণা? মা হিসেবে কীভাবে সামলাবেন?

একটি ১৫ বছর বয়সী ছেলের আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে এক মা তার অনুভূতির কথা জানাচ্ছেন। আজকাল কিশোর বয়সে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এক ধরনের পরিবর্তন আসে, যা অনেক সময় অভিভাবকদের জন্য বেশ কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করে।

ছেলেটির মা বলছেন, তার ছেলের এমন কিছু আচরণ রয়েছে যা তিনি একেবারেই সহ্য করতে পারছেন না। ছেলের এই ধরনের “অবাধ্য” এবং “দুষ্টু” আচরণের কারণে তিনি হতাশায় ভুগছেন।

তিনি চান এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে এবং কীভাবে এই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায় সেই বিষয়ে সঠিক দিকনির্দেশনা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের অনুভূতি অস্বাভাবিক কিছু নয়। বিশেষ করে কিশোর বয়সে ছেলেমেয়েদের মানসিক এবং শারীরিক পরিবর্তনের কারণে অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানদের প্রতি বিরক্তি অনুভব করেন।

তবে, এই ধরনের অনুভূতিকে স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নেওয়া এবং এর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করাটা জরুরি। বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, অভিভাবকদের মনে রাখতে হবে, এই সময়টাতে ছেলেমেয়েরা হরমোনের কারণে অস্থির থাকে এবং তাদের আচরণে পরিবর্তন আসতেই পারে।

এই পরিস্থিতিতে একজন মা হিসেবে আপনি নিজেকে দোষারোপ করতে পারেন, কিন্তু এটি মনে রাখতে হবে যে, আপনার সন্তানের প্রতি খারাপ লাগা বা বিরক্তি আসাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বরং, এই অনুভূতিকে স্বীকার করে নেওয়াই ভালো।

নিজের ভেতরের কষ্টগুলো চেপে রাখলে তা আরও বাড়তে পারে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, এই ধরনের পরিস্থিতিতে হতাশ না হয়ে বরং কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন, সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা, তার সমস্যাগুলো বোঝার চেষ্টা করা এবং ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা।

প্রয়োজনে মনোবিদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। কারণ, একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি পরিস্থিতি ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে সঠিক পরামর্শ দিতে পারেন।

বাংলাদেশেও অনেক পরিবার এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়। সন্তানের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের আচরণে পরিবর্তন আসে, যা অভিভাবকদের জন্য মানসিক চাপ তৈরি করে।

এমন পরিস্থিতিতে পরিবারের অন্য সদস্যদের সহযোগিতা, বিশেষ করে দাদা-দাদি বা অন্য অভিভাবকদের পরামর্শ অনেক উপকারে আসতে পারে।

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সহায়তা পাওয়ার জন্য আমাদের দেশেও বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা রয়েছে। আপনি চাইলে আপনার এলাকার কোনো মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

এছাড়া, সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন কাউন্সেলিং সেন্টারও খোলা হয়েছে, যেখানে আপনি আপনার সমস্যার কথা বলতে পারেন এবং সমাধান খুঁজে পেতে পারেন।

মনে রাখতে হবে, এই ধরনের সমস্যা সমাধানে সময় লাগতে পারে, তবে ধৈর্য ধরে চেষ্টা করলে অবশ্যই ইতিবাচক ফল পাওয়া সম্ভব।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *