যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, এই অঞ্চলের জন্য সামনে আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।
টর্নেডোর আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টেনেসির সেলমার শহর। এখানে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
এছাড়া, মিসৌরি ও ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যেও ঝড়ের তাণ্ডবে মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
টর্নেডোর তাণ্ডবের পরেই শুরু হয় অবিরাম বৃষ্টি। এর ফলে মিসিসিপি উপত্যকার কিছু অংশে, বিশেষ করে আরকানসাস, মিসৌরি, টেনিসি এবং মিসিসিপিতে মারাত্মক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
টেনেসির গভর্নর বিল লি জনগণকে সতর্ক করে বলেছেন, “আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে। অনেক ক্ষতি হয়েছে, অনেক জীবনহানি ঘটেছে, তবে এই বিপদ এখনো কাটেনি।”
রাজ্যের জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, এরই মধ্যে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বন্যার কারণে প্রায় ৪ হাজারের বেশি মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানা গেছে, আগামী কয়েকদিনে ওহাইও উপত্যকা, মিড-সাউথ এবং মিসিসিপি উপত্যকায় “জীবনহানিকর” বন্যা ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া দেখা যেতে পারে।
এর মধ্যে আরকানসাস, লুইজিয়ানা এবং টেক্সাস অঞ্চলে ক্ষতির সম্ভবনা সবচেয়ে বেশি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এই বৃষ্টিপাতের ফলে “শত বছরের মধ্যে একবার” এমন বন্যা দেখা দিতে পারে।
কেনটাকি রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানকার গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার সতর্ক করে বলেছেন, রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা হতে পারে।
রাজ্যের অন্তত ২৫টি মহাসড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে এখানে একটি ভয়াবহ শীতকালীন ঝড়ে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছিল এবং ২০২১ সালে বড় ধরনের বন্যা দেখা দেয়।
নাসভিলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পানির নিচে আটকে পড়া এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এছাড়াও জরুরি বিভাগের কর্মীরা দুর্গতদের জন্য খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ করছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের চরম আবহাওয়ার ঘটনা বাড়ছে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৭০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শহরে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় ও ফেডারেল সংস্থাগুলো উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন