গ্রিনল্যান্ডে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আর্কটিক অঞ্চলের এই দ্বীপটির উপর নিজেদের আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে, যা ডেনমার্কের সার্বভৌমত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, কোনো দেশ দখলের চেষ্টা করা উচিত নয়।
সম্প্রতি, গ্রিনল্যান্ডে তিন দিনের এক সফরে যান ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী। এই সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের এমন আগ্রহের তীব্র বিরোধিতা করেন।
কারণ হিসেবে তিনি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা রক্ষার যুক্তির বিপরীতে অন্য একটি দেশের অঞ্চল দখলের ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফ্রেডেরিকসেনের এই সফরকালে ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স গ্রিনল্যান্ডে একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শন করেন এবং ডেনমার্কের বিরুদ্ধে অঞ্চলটিতে বিনিয়োগের অভাবের অভিযোগ তোলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গ্রিনল্যান্ড তাদের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং দেশটির নিরাপত্তা রক্ষার জন্য এর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া জরুরি।
যদিও গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, তবুও যুক্তরাষ্ট্রের এমন আগ্রহে ডেনমার্ক উদ্বিগ্ন।
ফ্রেডেরিকসেন এই বিষয়ে বলেন, ডেনমার্ক একটি নির্ভরযোগ্য মিত্র এবং ন্যাটো জোটের সদস্য হিসেবে সবসময় যুক্তরাষ্ট্রের পাশে ছিল।
তিনি আরও বলেন, যখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ করতে বলে, তারা তা করে; যখন প্রতিরক্ষা খাতে আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে বলে, তারা সেই অনুরোধও রাখে।
কিন্তু যখন ডেনমার্কের একটি অংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়, তখন তারা হতাশ হয়।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা রক্ষার অজুহাতেও অন্য কোনো দেশের অঞ্চল দখল করা যায় না।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, আর্কটিকে নিরাপত্তা জোরদার করতে চাইলে ডেনমার্কের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
এদিকে, গ্রিনল্যান্ডের রাজনৈতিক দলগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ।
তারা ডেনমার্ক থেকে স্বাধীনতা অর্জনের দিকে ঝুঁকছে।
এই পরিস্থিতিতে, গ্রিনল্যান্ডের রাজনৈতিক দলগুলো একটি নতুন জোট সরকার গঠনের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স আবারও অভিযোগ করেছেন যে ডেনমার্ক গ্রিনল্যান্ডের অবকাঠামো এবং নিরাপত্তা খাতে যথেষ্ট বিনিয়োগ করেনি।
তিনি আরও বলেন, গ্রিনল্যান্ডের নিরাপত্তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং তারা তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস