বিদেশিদের শাস্তি দিতে গিয়ে আমেরিকাবাসীর ক্ষতি করছেন ট্রাম্প!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে, যা সরাসরি আঘাত হানতে পারে মার্কিন অর্থনীতিতে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নীতি কার্যত বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর চেয়ে বেশি ক্ষতি করছে মার্কিন নাগরিকদেরই।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই উদ্বেগের কারণগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপের পেছনের যুক্তিগুলো দুর্বল এবং এতে হিসাবের পদ্ধতিতেও রয়েছে গুরুতর ত্রুটি। তারা মনে করেন, এই নীতি মূলত লোক দেখানো, যার মূল লক্ষ্য ভালো অর্থনৈতিক কৌশল তৈরি করা নয়।

এর ফলে বিশ্বজুড়ে বাজারগুলোতে দেখা যাচ্ছে অস্থিরতা, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তৈরি করছে গভীর উদ্বেগ। শেয়ার বাজারে দরপতন হয়েছে, এবং এর ফলস্বরূপ অনেক কোম্পানির কর্মীর চাকরি হারানোর সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে।

এই শুল্ক নীতির কারণে, মার্কিন নাগরিকদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়বে, যা তাদের জীবনযাত্রার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। উদাহরণস্বরূপ, কফি, বিশেষ কিছু ওয়াইন এবং প্রযুক্তি শিল্পের জন্য অপরিহার্য কিছু খনিজ পদার্থের দাম বাড়তে পারে।

অর্থনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই নীতি বাস্তবসম্মত নয়। তারা মনে করেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও বিস্তারিত গবেষণা ও বিশ্লেষণের প্রয়োজন ছিল।

এমনকি কিছু অর্থনীতিবিদ এই হিসাবের পদ্ধতিকে ‘নবম শ্রেণির ছাত্রের’ অর্থনীতির ক্লাসের একটি দুর্বল উপস্থাপনার সঙ্গে তুলনা করেছেন।

এই নীতির ফলস্বরূপ, বিশ্বজুড়ে অনেক দেশের নেতারা তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন এবং এর প্রতিশোধ নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন। এর প্রভাব ইতোমধ্যেই বিভিন্ন শিল্পে পড়তে শুরু করেছে।

উদাহরণস্বরূপ, গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘স্টেলান্টিস’ শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছে।

তাহলে বাংলাদেশের জন্য এর প্রভাব কী?

বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনে বাংলাদেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির পরিবর্তন আমাদের আমদানি ও রপ্তানি খাতে প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর এর একটি বড় প্রভাব পড়তে পারে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। এছাড়াও, নিত্যপ্র প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়লে, তা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলবে।

সুতরাং, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির এই পরিবর্তনের দিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিত। আমাদের নীতিনির্ধারকদের উচিত হবে, বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *