প্রয়াত ‘ভারত’ কুমার: শোকের ছায়া!

ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের প্রখ্যাত অভিনেতা মনোজ কুমার, যিনি দেশপ্রেমমূলক চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সুপরিচিত ছিলেন, ৮৭ বছর বয়সে মারা গেছেন। শুক্রবার মুম্বাইয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর প্রয়াণ ঘটে।

অভিনেতার ছেলে, কুনাল গোস্বামী সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছিলেন। শনিবার তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।

মনোজ কুমার, যাঁর আসল নাম হরিকিশন গোস্বামী, হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের কাছে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি ‘ভারত কুমার’ নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন, যা ভারতের প্রতি তাঁর ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

দেশপ্রেম, জাতীয়তাবাদ এবং ঐক্যের বার্তা নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রে তাঁর অভিনয় আজও স্মরণীয়।

পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে চলচ্চিত্র জগতে তাঁর অভিষেক হয়। এরপর তিনি বহু জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘উপকার’ (১৯৬৭), ‘পূরব অউর পশ্চিম’ (১৯৭০), এবং ‘ক্রান্তি’ (১৯৮১)।

এই ছবিগুলো দর্শক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এবং অভিনেতা হিসেবে তাঁর খ্যাতি আরও বাড়িয়ে তোলে।

তাঁর অসাধারণ অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ মনোজ কুমার একাধিক জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। তিনি ভারতের চলচ্চিত্র জগতের সর্বোচ্চ সম্মান, দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারও লাভ করেন।

এছাড়াও তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

তাঁর প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, মনোজ কুমার ভারতীয় চলচ্চিত্রের একজন ‘আইকন’ ছিলেন এবং তাঁর কাজগুলি “জাতীয় গর্বের চেতনা জাগিয়েছিল এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে”।

ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এক্সে (সাবেক টুইটার) শোক প্রকাশ করে লেখেন, “কিংবদন্তি অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। ভারতীয় চলচ্চিত্রে তিনি এক অমলিন স্বাক্ষর রেখে গিয়েছেন।”

অভিনেতা অক্ষয় কুমারও শোক প্রকাশ করে বলেন, “ছোটবেলা থেকে তাঁর কাছ থেকে শিখেছি, দেশের প্রতি ভালোবাসা ও গর্বের মতো এত বড় অনুভূতি আর কিছু নেই।

আর আমরা অভিনেতারা যদি এই অনুভূতি দেখাতে এগিয়ে না আসি, তবে কে আসবে? এমন একজন ভালো মানুষ, আমাদের শিল্পী সমাজের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ ছিলেন তিনি।”

মনোজ কুমারের প্রয়াণে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে এক গভীর শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর কাজগুলি দর্শক হৃদয়ে চিরকাল অম্লান থাকবে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *