আকাশে দেখা যাওয়া এক অদ্ভুত আলোর খেলা, যা রকেট উৎক্ষেপণের ফল!
সম্প্রতি ইউরোপের আকাশে এক অত্যাশ্চর্য ঘটনা দেখা গেছে, যা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। মহাকাশে রকেট পাঠানোর সময় তৈরি হওয়া আলোকরশ্মির এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য, যা আগে খুব একটা দেখা যেত না, এখন ক্রমশই সাধারণ হচ্ছে।
আসলে, স্পেসএক্স (SpaceX) ফ্যালকন ৯ (Falcon 9) রকেটের উৎক্ষেপণের ফলে সৃষ্ট এই আলোকমালার পিছনে রয়েছে এক বিশেষ বিজ্ঞান।
এই দৃশ্যগুলো হয় “সর্পিল” অথবা “জেলিফিশ”-এর মতো আকার ধারণ করে। হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের (Harvard-Smithsonian Center for Astrophysics) জ্যোতির্পদার্থবিদ জোনাথন ম্যাকডওয়েল (Jonathan McDowell) ব্যাখ্যা করেন, এই ধরনের ঘটনা আসলে মহাকাশে বিভিন্ন বস্তুর গতিবিধির কারণে ঘটে।
ফ্যালকন ৯ রকেট যখন উৎক্ষেপণ করা হয়, তখন এর দ্বিতীয় স্তরে থাকা অতিরিক্ত জ্বালানি নির্গত হওয়ার সময় আকাশে এক ধরনের ঘূর্ণন সৃষ্টি হয়, যা “সর্পিল” আকার তৈরি করে। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লেইস কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটেড ডিজাইন-এর (Klesse College of Engineering & Integrated Design) সহযোগী ডিন ড. ক্রিস্টোফার কম্বস (Dr. Christopher Combs) এই বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
অন্যদিকে, “জেলিফিশ”-এর মতো দেখতে আলোকমালার সৃষ্টি হয় রকেটের প্রথম স্তরের নির্গত ধোঁয়ার কারণে। উপরের বায়ুমণ্ডলে এই ধোঁয়া ছড়িয়ে যাওয়ার ফলে এক বিশাল আকারের “জেলিফিশ”-এর রূপ নেয়।
এই দৃশ্যগুলো স্পষ্টভাবে দেখার জন্য কিছু বিশেষ পরিস্থিতির প্রয়োজন। সাধারণত, সন্ধ্যা বা ভোরের আলোয়, যখন আকাশ অন্ধকার থাকে, তখনই এগুলো ভালোভাবে দেখা যায়। রাতের আকাশে বিমানের মতোই, এই আলোকমালার দূরত্ব সম্পর্কে অনেক সময় ভুল ধারণা হতে পারে।
বর্তমানে মহাকাশ গবেষণার আগ্রহ বাড়ছে, তাই ভবিষ্যতে এই ধরনের দৃশ্য আরও বেশি দেখা যেতে পারে। বিশ্বে রকেট উৎক্ষেপণের সংখ্যাও বাড়ছে, যা আগে ছিল বছরে ১৫০টির কম, এখন তা ২৫০ এর বেশি।
যেহেতু মহাকাশ গবেষণা একটি বৈশ্বিক প্রক্রিয়া, তাই ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকেও হয়তো এমন দৃশ্য দেখার সম্ভাবনা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: CNN