মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ: ১০০০ পয়েন্ট পতনের শঙ্কা!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কায় শুক্রবার বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় চীন পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এর ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শেয়ার বাজার সূচকগুলো উল্লেখযোগ্য ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

শুক্রবার সকালে খবর পাওয়া গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ১০০০ পয়েন্ট পর্যন্ত পড়তে পারে। এছাড়া, এস&পি ৫০০ সূচক ২.৪ শতাংশ এবং প্রযুক্তি খাতের সূচক নাসডাক কম্পোজিট ২.৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ১০ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করবে। বিশ্বের বৃহত্তম এই দুই অর্থনীতির দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা বাণিজ্য যুদ্ধের এটি একটি বড় ধরনের পদক্ষেপ।

তবে, ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে মোড় নেয়।

ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন এবং মার্চ মাসে তা বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করেন। এরপর বুধবার তিনি ঘোষণা করেন, চীনের ওপর শুল্কের হার ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে থেকেই সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও দেশটির ওপর আমদানি শুল্ক বহাল রেখেছিলেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাণিজ্য যুদ্ধের এই তীব্রতা বিশ্ব অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে। এরই মধ্যে, বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার ডাউ জোন্স সূচক ১,৬০০ পয়েন্টের বেশি কমেছিল, যা প্রায় ৪ শতাংশের সমান। এস&পি ৫০০ প্রায় ৫ শতাংশ এবং নাসডাক প্রায় ৬ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে গিয়েছিল।

এই তিনটি প্রধান সূচক গত পাঁচ বছরের মধ্যে, বিশেষ করে কোভিড মহামারীর পর, সবচেয়ে খারাপ পারফর্ম করেছে।

শেয়ার বাজারের এই অস্থিরতার কারণে ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যের বাজারগুলোতেও ৩ শতাংশের বেশি দরপতন হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারের এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বাণিজ্য যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে, বাংলাদেশের রপ্তানি, আমদানি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের সতর্ক থাকতে হবে।

বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রাখতে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *