আতঙ্কে গ্রান্ড ন্যাশনাল! ঘোড়দৌড়ের ভাগ্য নির্ধারণ?

ঐতিহ্য আর নিরাপত্তার এক কঠিন দ্বন্দ্বে: গ্র্যান্ড ন্যাশনাল

প্রতি বছর, যুক্তরাজ্যের অ্যাintট্রি-তে অনুষ্ঠিত হওয়া গ্র্যান্ড ন্যাশনাল ঘোড়দৌড় বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে। এই জনপ্রিয় প্রতিযোগিতায় ঘোড়সওয়ারদের দক্ষতা আর ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে তোলে।

তবে, এই আকর্ষণীয় খেলার আকর্ষণীয়তার পেছনে লুকিয়ে আছে এক গভীর বিতর্ক। একদিকে যেমন এর ঐতিহ্যকে ধরে রাখার চেষ্টা, তেমনই অন্যদিকে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ।

প্রতি বছর প্রায় ৬০ লক্ষ দর্শক এই প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন, আর বাজি ধরা হয় প্রায় ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ১৯,৫০০ কোটি বাংলাদেশি টাকা)। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ এই প্রতিযোগিতার জনপ্রিয়তার প্রমাণ দেয়।

তবে, প্রতিযোগিতাটি নিরাপদ করতে গিয়ে আয়োজকদের traditionalistদের সমালোচনার শিকার হতে হচ্ছে। তাদের মতে, নিয়মকানুন সহজ করার ফলে গ্র্যান্ড ন্যাশনাল তার আসল আকর্ষণ হারাচ্ছে।

আয়োজকরা ঘোড়দৌড়টিকে আরও নিরাপদ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে, মাঠের বাধাগুলো সহজ করা এবং ঘোড়ার সংখ্যা কমানো। এমনকি, ঘোড়ার গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) ব্যবহার করারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

‘স্লিপ’ নামের একটি অ্যাপ ঘোড়ার চলন বিশ্লেষণ করে আঘাতের সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে। প্রতিযোগিতার আগে প্রতিটি ঘোড়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং দৌড়ের সময় তাদের হৃদস্পন্দন ও পদক্ষেপের ওপর নজর রাখা হয়।

তবে, এই পরিবর্তনের ফলে অনেকে ঐতিহ্য হারানোর অভিযোগ করছেন। তাদের মতে, এক সময়ের কঠিন এই প্রতিযোগিতা এখন তার আগের মতো নেই।

আগে যেখানে কঠিন বাধাগুলো অতিক্রম করাই ছিল আসল চ্যালেঞ্জ, সেখানে এখন দৌড়টি যেন অন্য সাধারণ ম্যারাথন রেসের মতোই হয়ে গেছে।

তবে, আয়োজকরা বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খেলার পরিবর্তন হওয়াটা স্বাভাবিক। তারা সব সময়ই প্রতিযোগীদের নিরাপত্তা এবং খেলার আকর্ষণীয়তা—দুটোই বজায় রাখতে চান।

গ্র্যান্ড ন্যাশনাল কর্তৃপক্ষের প্রধান ডিকন হোয়াইট জানান, প্রতি বছর প্রতিযোগিতার পর তারা এর ভালো এবং খারাপ দিকগুলো পর্যালোচনা করেন এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনেন।

এই প্রতিযোগিতার জনপ্রিয়তা এখনো অনেক। যদিও নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে এর দর্শক সংখ্যা ছিল ১ কোটির বেশি, এখনো এটি খেলাপ্রেমীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়।

বাজি ধরার পরিমাণও অনেক বেশি, যা অন্যান্য খেলার তুলনায় অনেক বেশি।

গ্র্যান্ড ন্যাশনাল শুধু একটি খেলা নয়, এটি একটি ঐতিহ্য। একদিকে যেমন এই খেলার আকর্ষণীয়তা বজায় রাখতে হবে, তেমনই খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাও জরুরি।

আয়োজকরা এই দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। এখন দেখার বিষয়, এই কঠিন লড়াইয়ে তারা কতটা সফল হন।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *