ভিসা এবং ই-টিএ: ভ্রমণের পরিকল্পনা করার আগে যা জানা জরুরি
ভ্রমণ সবসময়ই আনন্দের, আর নতুন কোনো স্থানে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে মনটা খুশিতে ভরে ওঠে। তবে, ভ্রমণের সময় ভিসা এবং ই-টিএ (eTA – Electronic Travel Authorization) নিয়ে অনেক সময় দ্বিধা তৈরি হয়। বিশেষ করে যারা প্রথমবার বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন, তাদের জন্য এই বিষয়গুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের লেখায় আমরা ভিসা, ই-টিএ, এবং ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব, যা ভ্রমণকে আরও সহজ করে তুলবে।
ভিসা ও ই-টিএ’র মধ্যে পার্থক্য কি?
ভিসা (Visa) হলো একটি আনুষ্ঠানিক অনুমতিপত্র, যা একটি নির্দিষ্ট দেশে প্রবেশের জন্য প্রয়োজন হয়। সাধারণত, ভিসার জন্য আগে থেকে আবেদন করতে হয় এবং এটি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বৈধ থাকে।
অন্যদিকে, ই-টিএ (eTA) হলো ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে ভ্রমণের অনুমতি, যা সাধারণত স্বল্প সময়ের জন্য এবং পর্যটকদের জন্য প্রযোজ্য। ই-টিএ’র আবেদন প্রক্রিয়া ভিসার চেয়ে তুলনামূলকভাবে সহজ এবং দ্রুত সময়ে সম্পন্ন করা যায়।
ভিসা এবং ই-টিএ’র খরচ কেমন?
ভিসা এবং ই-টিএ’র খরচ বিভিন্ন দেশের জন্য ভিন্ন হয়ে থাকে। কিছু ই-টিএ-র খরচ খুবই কম, যেমন ১০ ডলারের মতো, আবার কিছু ভিসার জন্য ১০০ ডলারের বেশি খরচ হতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, ব্রাজিলের ই-ভিসার জন্য প্রায় ৮০.৯০ ডলার খরচ হয়। তাই ভ্রমণের আগে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের ভিসা ফি সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত।
ভিসা বা ই-টিএ’র জন্য কিভাবে আবেদন করবেন?
ভিসা অথবা ই-টিএ’র জন্য আবেদন করার সময় কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন – নাম, ঠিকানা, পাসপোর্টের নম্বর, ভ্রমণের তারিখ এবং গন্তব্যস্থলের ঠিকানা জমা দিতে হয়। অনেক সময় ছবি এবং অন্যান্য কাগজপত্রও জমা দিতে হতে পারে।
তাই, আবেদন করার আগে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র গুছিয়ে রাখা ভালো।
কতদিনের জন্য ভিসা বা ই-টিএ পাওয়া যায়?
ভিসা বা ই-টিএ সাধারণত এক সপ্তাহ থেকে শুরু করে ১৮০ দিন পর্যন্ত সময়ের জন্য ইস্যু করা হয়ে থাকে। মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা থাকলে আপনি একাধিকবার সেই দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন।
ভিসা বা ই-টিএ’র জন্য কত আগে আবেদন করা উচিত?
ভিসা অথবা ই-টিএ’র জন্য ভ্রমণের তারিখের কয়েক মাস আগে আবেদন করা ভালো। যদিও ই-টিএ দ্রুত পাওয়া যায়, তবুও নিশ্চিত হয়ে নেওয়ার জন্য আগে আবেদন করা বুদ্ধিমানের কাজ।
কিছু দেশে ভ্রমণের খুব কাছাকাছি সময়েও আবেদন করার সুযোগ থাকে।
ইউরোপ এবং অন্যান্য গন্তব্যের ভিসা-সংক্রান্ত বিষয়
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (European Union) তাদের ই-টিএ (ETIAS) ব্যবস্থা ২০২৬ সালের শেষ ত্রৈমাসিকে চালু করার কথা জানিয়েছে। বর্তমানে ইউরোপে যেতে ভিসা অথবা ই-টিএ’র প্রয়োজন নেই।
তবে, ভ্রমণ করার আগে সর্বশেষ আপডেটের জন্য কর্তৃপক্ষের ঘোষণা দেখে নেওয়া ভালো। যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মতো কিছু দেশে যেতে হলে ই-টিএ’র প্রয়োজন হয়।
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা-মুক্ত দেশ
বিভিন্ন দেশের ভিসা নীতি আলাদা হওয়ায়, ভ্রমণের আগে অবশ্যই সেই দেশের ভিসা অথবা ভ্রমণের নিয়মাবলী সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। বাংলাদেশ থেকে অনেকেই বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতে চান।
তাদের জন্য কিছু ভিসা-মুক্ত বা অন-অ্যারাইভাল ভিসা-সুবিধা সম্পন্ন দেশ রয়েছে।
ভিসা এবং ই-টিএ ছাড়াও ভ্রমণের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা
ভিসা বা ই-টিএ ছাড়াও, ভ্রমণের সময় আরও কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে। যেমন, আপনার পাসপোর্ট ভ্রমণের তারিখ থেকে অন্তত ৬ মাস পর্যন্ত বৈধ থাকতে হবে।
এছাড়াও, গন্তব্য দেশের স্বাস্থ্যবিধি এবং ভ্রমণের অন্যান্য নিয়মাবলী সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে।
ভিসা এবং ই-টিএ সংক্রান্ত তথ্যের জন্য নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন এবং ভ্রমণের আগে কর্তৃপক্ষের দেওয়া নির্দেশিকা অনুসরণ করুন।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক