ম্যানচেস্টার সিটি ছাড়ছেন কেভিন ডি ব্রুইন? পেপ গার্দিওলার সাফল্যের যুগে কি তবে সমাপ্তির ঘণ্টা?
ফুটবল বিশ্বে বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির তারকা মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইন। শোনা যাচ্ছে, হয়তো ক্লাব ছাড়তে পারেন তিনি। বেলজিয়ামের এই ফুটবলারের সম্ভাব্য সৌদি প্রো লিগে যাওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, আবার ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় লিগগুলোতেও খেলার সম্ভাবনা রয়েছে।
ডি ব্রুইনের এই সম্ভাব্য বিদায় একদিকে যেমন ফুটবলপ্রেমীদের হতাশ করছে, তেমনই প্রশ্ন জাগাচ্ছে পেপ গার্দিওলার অধীনে ম্যানচেস্টার সিটির ভবিষ্যৎ নিয়ে।
ডি ব্রুইন মাঠের খেলাটা অন্য সবার চেয়ে ভালোভাবে বুঝতে পারতেন। তাঁর খেলার ধরন ছিল ক্ষিপ্র এবং বুদ্ধিদীপ্ত। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাঁর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মাঝমাঠের এই খেলোয়াড় শুধু সঠিক সময়ে সঠিক পাস দেওয়ার জন্যই পরিচিত নন, বরং দলের আক্রমণকে আরও শক্তিশালী করতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার।
তাঁর বুদ্ধিদীপ্ততা এবং নিখুঁত পাসের কারণে সতীর্থরা প্রায়ই সুবিধা পেতেন। এর প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর সতীর্থদের মন্তব্যে। উদাহরণস্বরূপ, আর্লিং হালান্ড একবার বলেছিলেন, “আমি সবসময় জানি, ডি ব্রুইন কখন পাস দেবেন।”
আবার, ফিল ফোডেন বলেছিলেন, “শুধু সঠিক জায়গায় দৌড় লাগাও, তিনি ঠিক খুঁজে নেবেন।”
ডি ব্রুইনের ফুটবল জীবনের দিকে তাকালে দেখা যায়, তিনি সবসময় খেলার প্রতি নিবেদিত ছিলেন। চেলসিতে খেলার সময় তিনি প্রথম সারির খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন। এরপর তিনি প্রমাণ করেছেন, কঠোর পরিশ্রম এবং একাগ্রতা থাকলে যে কোনো কিছুই জয় করা সম্ভব।
মাঠে তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্সের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৯-২০ মৌসুমে ব্যালন ডি’অরের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন, যদিও কোভিড পরিস্থিতির কারণে সেই পুরস্কারটি বাতিল করা হয়।
ডি ব্রুইনের খেলার ধরন এবং মাঠের বাইরের জীবন দুটোই বেশ সাদামাটা। প্রচারের আলো থেকে দূরে থাকতে পছন্দ করা এই ফুটবলার মাঠের খেলায় মনোযোগী ছিলেন। তিনি সবসময় দলের জন্য নিবেদিত ছিলেন এবং তাঁর এই মনোভাব সতীর্থদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে।
ডি ব্রুইনের ক্লাব ছাড়ার সম্ভাবনা গার্দিওলার দলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। কারণ, ডি ব্রুইন শুধু একজন খেলোয়াড় ছিলেন না, তিনি ছিলেন দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। তাঁর খেলার ধরনে যেমন ছিল সৌন্দর্য, তেমনই ছিল দলের প্রতি গভীর ভালোবাসা।
তাঁর বিদায় হয়তো দলের খেলার ধরনে পরিবর্তন আনবে, তবে তাঁর অবদান সবসময় স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ডি ব্রুইনের সম্ভাব্য সৌদি প্রো লিগে যাওয়া নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা চলছে। যদি তিনি এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন, তবে ফুটবল বিশ্বে আর্থিক বিষয়গুলো আবারও আলোচনায় আসবে।
তবে ডি ব্রুইন প্রমাণ করেছেন, মাঠের খেলাটাই আসল এবং ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে অর্থের প্রয়োজন হয় না।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান