শেয়ার বাজারে বড় দরপতন, উদ্বেগে বিশ্ব অর্থনীতি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি নিয়ে উদ্বেগের জেরে বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে বড় ধরনের দরপতন দেখা দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজার, বিশেষ করে ওয়াল স্ট্রিটে, গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সময় পার করেছে। কোভিড-১৯ সংকটের সময় এর চেয়ে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার বাণিজ্য নীতিতে অটল থাকার ঘোষণা দেওয়ার পরেই বাজারের এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান সতর্ক করে বলেছিলেন, এর ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাবে।
নিউ ইয়র্কের শেয়ার বাজারে এসএন্ডপি ৫০০ সূচক ৬ শতাংশ বা ৩২২ পয়েন্ট কমেছে। এছাড়া, ডাউ জোন্স শিল্প সূচক ৫.২ শতাংশ বা ২,২৩১.০৭ পয়েন্ট হ্রাস পেয়েছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ডাউ জোন্সের এই দরপতনে প্রায় ৬.৪ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ কমে গেছে, যা বাংলাদেশি টাকায় হিসাব করলে বিশাল একটি অঙ্ক। প্রযুক্তি-নির্ভর নাসডাক কম্পোজিট সূচকও ৫.৮ শতাংশ কমেছে এবং ডিসেম্বর মাস থেকে এই সূচক ২০ শতাংশের বেশি পতনের কারণে ‘bear market’-এ প্রবেশ করেছে।
এই সপ্তাহে এসএন্ডপি ৫০০ সূচক ৯.১ শতাংশ কমেছে, যা ২০২০ সালের মার্চের পর থেকে সবচেয়ে বড় পতন। ট্রাম্প অবশ্য তার নীতির সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন, কিন্তু এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
চীনের পক্ষ থেকেও এই বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, যা বিশ্বের বৃহত্তম দুটি অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করেছে। অন্যান্য দেশের সরকারগুলোও এই পরিস্থিতিতে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই দরপতনের প্রভাব শুধু সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। লন্ডনের এফটিএসই ১০০ সূচক ৫ শতাংশ, প্যারিসের সিএসি ৪০ সূচক ৪.৩ শতাংশ এবং টোকিওর নিক্কেই ২২৫ সূচক ২.৮ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরোম পাওয়েল সতর্ক করে বলেছেন, শুল্ক বৃদ্ধির পরিমাণ প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে। এর ফলস্বরূপ, মূল্যস্ফীতি বাড়বে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও কিছু প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটালের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর, কিছুটা চাপ সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে দেশের বাজারেও তার প্রভাব পড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।